নির্বাচনী সহিংসতায় আহত যুবকের মৃত্যু
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৫২ অপরাহ্ন, ২৬শে মে ২০২৪
দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গুরুত্বর আহত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বিজয়ী চেয়ারম্যানের এক সমর্থক মারা গেছেন। তার নাম তরিকুল ইসলাম তারিক (৩৫)।
রবিবার (২৬ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।নিহতের ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম টরিক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে সোয়া ৪ টার দিকে ভোট গণনার সময় কুমারখালীর চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ কলোনীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি আহত হয়। তারিক একই ইউনিয়নের জয়নাবাদ মন্ডলপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় পরকীয়ার জেরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩
তিনি বিজয়ী চেয়্যারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খানের আনারস প্রতীকের সমর্থক ছিলেন। এছাড়া তারিক ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে এ হত্যাকান্ডের মদদদাতা হিসেবে আব্দুল মান্নান খান স্থানীয় প্রতিনিধিকে দায়ি করেছেন।
হামলার ঘটনায় ২৩ মে নিহতের বড় ভাই তরিকুল ইসলাম টরিক বাদী হয়ে এজাহারে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরো ৫ থেকে ৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ কলোনীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আধিপত্য নিয়ে সকাল থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। ভোট গণনার সময় কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক এমপির ছেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম মোরশেদ পিটারের সমর্থক আনিসুর রহমান লালের নেতৃত্বে মধু সাদ্দামসহ ১৫ থেকে ২০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মান্নান খানের সমর্থকদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে তারিকুল ইসলাম তারিক, তার বড় ভাই তারিকুল ইসলাম টরিক, রাশেদ ও নাজিরুল ইসলাম গুরুত্বর আহত হয়। আহতদের কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারিককে ঢাকায় রেফার করেন।
আরও পড়ুন: এমপি আনারকে হত্যা, কালীগঞ্জজুড়ে কান্নার রোল
নিহতের বড় ভাই তারিকুল ইসলাম টরিক বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের পেছনে মদদ দাতা আছে। তাকে চিহ্নিত করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মামলার প্রধান আসামী সন্ত্রাসী লালসহ মদদ দাতাদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
এঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় সাধারন জনগন রবিবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে ছেউড়িয়া মন্ডলপাড়া এলাকা থেকে জয়িনাবাদ মন্ডলপাড়া এলাকা পর্যন্ত খুনিদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
কুমারখালী উপজেলা পরিষদের বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান বলেন, নিহত তারিক আমার কর্মী ও সমর্থক। এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মন্জু বলেন, নির্বাচনের দিন আমি ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দুরে ছিলাম। হামলাকারীরা মটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক ছিল। আর আমি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মটরসাইকেলর প্রতিকের পক্ষে নির্বাচন করেছি। এই সন্দেহে থেকে হয়তোবা তিনি এমন অভিযোগ তুলছেন। তবে এ ঘটনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম মোরশেদ পিটারের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: টানা তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন মান্নান খান
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, মারা যাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। গত ২৩ মে নিহতের ভাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এমএল/