টাঙ্গাইলের সৃষ্টি স্কুলের শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, ৫ই জুন ২০২৪
টাঙ্গাইলের সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল ক্যাম্পাস-২ এর আবাসিক ভবনের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বলাৎকারের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরই ওই ক্যাম্পাসের আবাসিক গণিত বিষয়ের শিক্ষক প্রণয় সরকার আত্মগোপন করেছেন। শিক্ষক প্রণয় সরকার জেলার ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের আনন্দ মোহন সরকারের ছেলে।
সোমবার (৩ জুন) বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ওই শিক্ষার্থীকে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুুল থেকে টিসি(ট্রান্সফার সার্টিফিকিট) নিয়ে চলে যান।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার এক প্রবাসীর অষ্টম শ্রেণির ছেলেকে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আবাসিকে ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি ওই আবাসিকের শিক্ষক প্রণয় সরকার রাতে ওই শিক্ষার্থীকে তার রুমে নিয়ে বলাৎকার করেন। ভবনে থাকা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ঘটনাটি যাতে প্রকাশ না পায় এবং প্রকাশ পেলে ওই শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক প্রণয় সরকার তার মায়ের অসুস্থ্যতা দেখিয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে ফিরে আসেননি।
ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষার্থী ভয়ে জবুথবু ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তার পরিবারের সাথে কথা বলা কমিয়ে দেয়। শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে পরিবারের চাপে গত রবিবার(২ জুন) বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী তার মাকে জানায়।
সোমবার (৩ জুন) সকালে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার বিচার দাবি করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক না থাকায় সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবনের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান হ্যাপি কোন সদুত্ত্বর দিতে পারেননি। পরে অভিভাবকরা চাপ দিয়ে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করে টিসি নেয়। এসময় বিদ্যালয় থেকে ঘটনাটি মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়া সহ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা তা নেয়নি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে গবাদিপশু পালনে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ
বলাৎকারের শিকার শিক্ষার্থীর চাচা জানান, ভালো লেখাপড়ার জন্য তার ভাতিজাকে সৃষ্টির আবাসিকে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষকই যখন শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ কাজ করে তাহলে নিরাপত্তা কোথায়? ঘটনাটি তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিতে চেয়েছে। সুষ্ঠু বিচার চাইলে কর্তৃপক্ষ তালবাহানা করে।
তিনি আরও জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটির মীমাংসার প্রস্তাব ও টাকা দিতে চেয়েছে। ওই শিক্ষকও পালিয়েছে। ছেলেটার সাথে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। ছেলেটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারও সাথে তেমন কথা বলছে না। তার মনে ভয় কাজ করছে। এ বিষয়ে তারা আইনের আশ্রয় নিবেন।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সরিষাজানী আলিম মাদ্রাসার কেউ পাস করেনি
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রণয় সরকারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সৃষ্টি একাডেমিকের স্কুল ক্যাম্পাস-২ এর আবাসিকের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান হ্যাপি জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন- কিন্তু ওই শিক্ষক ক্যাম্পাস না থাকায় সত্যতা যাচাই বা অন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওই শিক্ষার্থী মায়ের অসুখ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেনি। ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত।
জেবি/এসবি