সদরপুরে ১০ মাস পর কবর থেকে উঠানো হলো অজ্ঞাত তরুণীর মরদেহ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:১৩ অপরাহ্ন, ১৪ই জুলাই ২০২৪


সদরপুরে ১০ মাস পর কবর থেকে উঠানো হলো অজ্ঞাত তরুণীর মরদেহ
ছবি: প্রতিনিধি

ফরিদপুরের সদরপুরে মৃত্যুর ৫দিন পর বাড়ি ফিরলেন তরুণী, ১০মাস পর কবর থেকে তোলা হল লাশ। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ের শৌলডুবি গ্রামে। 


জানাযায়, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম তার শ্বশুর বাড়িতে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে সদরপুরের উদ্দেশ্যে বের হয়। পরবর্তীতে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজ থাকায় হাসি বেগমের পিতা সেক হাবিবুর রহমান সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার কন্যা হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ।


আরও পড়ুন: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পূত্রবধূকে ধর্ষণের দায়ে শ্বশুরের যাবজ্জীবন


হাসি বেগমের নিখোঁজ ঘটনায়, তার স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় একই সময়ে পাল্টা অভিযোগ করে যে, তার স্ত্রী নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার স্বর্নালংকার নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। 


ঘটনাচক্রে, ২০২৩ সালের ২০সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা কুমের কচুরিপানার ভেতর থেকে সনাক্তের অযোগ্য একটি অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে সেই লাশ হাসি বেগমের বলে দাবি করে হাসির পরিবার। নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি নখ ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের লাশ হিসেবে শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরাস্থানে লাশ দাফন করা হয়। 


হাসি বেগমের সংবাদ দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকে হাসি বেগম তার পরিবারকে মোবাইলে জানান তিনি জীবিত আছেন। এরপর হাসি বেগম কে থানা পুলিশ উদ্ধার করলে ৫ দিন পর বাড়ি ফিরে আসে। এলাকাবাসীর ধারনা, হাসি বেগম পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন।


আরও পড়ুন: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অজ্ঞাত নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার


হাসি বেগম ফিরে আসলেও জনমনে এক প্রশ্ন উঠে তাহলে কবর দেওয়া ওই নারীর মরদেহটি কার? ওই সময়ে সদরপুর থানার পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা থানার মানিকদহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের ইয়াদ আলীর কন্যা নিখোজ হয়। বর্তমানে ভাঙ্গা থানার মানিকদাহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের ইয়াদ আলী দাবি করেন কবর দেওয়া লাশটি তার মেয়ের। এবং তিনি আদালতে কবর থেকে মরদেহ উঠানো এবং সনান্তের দাবী করেন। যার পরিপ্রেক্ষীতে আদালতে নির্দেশে ম্যাজিট্রেট ও সদরপুর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে দীর্ঘ ১০মাস পর কবর থেকে লাশটি তোলা হয় এবং ডিএনএ টেস্টের জন্য লাশটির বিভিন্ন অংশের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়।

 

কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের বিষয় জানতে পেরে এলাকার শত শত নারী পুরুষ ভিড় জমান। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ বলেন, আমরা কবর থেকে রবিবার লাশ উত্তোলন করেছি এবং সেখান থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিক বিভাগের তথ্য পাওয়ার পর জানাযাবে আসলেই এই বেওয়ারিশ লাশটি ইয়াদ আলীর মেয়ের লাশ কিনা। লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিট্রেট দীপ্ত চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তালাত মাহমুদ সাহেন শাহ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. ইউনূস আলী, মানিকদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেকে। এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।


এমএল/