সরকারি সাত কলেজ নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিলেন ঢাবি অধ্যাপক


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪


সরকারি সাত কলেজ নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিলেন ঢাবি অধ্যাপক
ফাইল ছবি

 শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে নানান অভিযোগ, দাবি নিয়ে একাধিকবার রাস্তায় নেমেছে। ফলে এসব নিয়ে  বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি সাত কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে সাত কলেজের শিক্ষার মানকে কিভাবে আরও সুন্দর করা যায় এ সংকট নিরসনের লক্ষ্যে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।     


আরও পড়ুন: হাসিনা সরকার পতনের একমাস, ঢাকা কলেজে শহিদী মার্চ পালন


সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) এক পোস্টে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ  ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নতুন প্রস্তাব দেন ঢাবির এ অধ্যাপক।   


পোস্টে ঢাবি অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন লিখেন, ‘ঢাকার বড় বড় ৭টি কলেজ এবং আরো কিছু কলেজ নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বা পশ্চিমবাংলার কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি collegiate university-তে রূপান্তরিত করা। আগে বুঝতে হবে collegiate university কি? একটি কলেজিয়েট বিশ্ববিদ্যালয় হল এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে কাজগুলো একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন অনুমোদিত কলেজগুলোর মধ্যে ভাগ করা থাকে।’ 


যোগ করে তিনি আরও লিখেন, এই ৭টি কলেজের আরও কয়েকটি কলেজে নিয়ে এর একটিকে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবন হিসাবে বানিয়ে বাকি কলেজগুলোকে এর অনুমোদিত কলেজে পরিণত করা। কলেজগুলোতে কেবল ৩ বা ৪ বছরের অনার্স পড়াবে। সেখানে থাকবে না উচ্চ মাধ্যমিক বা ডিগ্রী পাসকোর্স। এই অনুমোদিত কলেজে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের মত। 


শিক্ষকদের যোগ্যতা ও কলেজগুলোর ডিগ্রী নিয়ে বলেন, আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে পিএইচডি। যেখানে এই অনুমোদিত কলেজের শিক্ষকদের সবারও ন্যূনতম পিএইচডি থাকা উচিত। ৪ বছরের অনার্সই হবে টার্মিনাল ডিগ্রী।এরপর পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে লিমিটেড সিটের জন্য ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মাস্টার্সে ভর্তি হবে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কেবল ৭ কলেজের কেন্দ্রিয় প্রশাসনিক ক্যাম্পাসেই মাস্টার্স পড়ানো হবে। 


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কেও ঢেলে সাজানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ৭ কলেজের মত করে আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কেও ঢেলে সাজানো যেতে পারে। ৭০০-৮০০ কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পড়ানোর অনুমোদন দেওয়া ছিল একটা ক্রাইম। এইসব কলেজে নাই পর্যাপ্ত শিক্ষক অথচ সেখানে থাকে উচ্চ মাধ্যমিক, বিএ ডিগ্রী পাসকোর্স এবং অনার্স মাস্টার্স। অধিকাংশ কলেজেই বড়জোর ৪ থেকে ৫ জন শিক্ষক আছে। ফলে তারা চাইলেও অনার্স মাস্টার্সের ক্লাস নিতে পারে না।


মাস্টার্স একটা বিশেষায়িত ডিগ্রী উল্লেখ করে অধ্যাপক বলেন, আর মাস্টার্স একটা বিশেষায়িত ডিগ্রী। এইটা সবার জন্য না। মাস্টার্স পড়ানোর জন্য বিশেষজ্ঞ শিক্ষক দরকার যাদের পিএইচডি আছে এবং একই সাথে গবেষণায় এক্টিভ। আমরা হরেদরে যেখানে সেখানে অনার্স মাস্টার্স পড়ানোর অনুমোদন দিয়ে জাতির সাথে প্রতারণা করছি। Stop that nonsense now!


আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ সন্দেহে ঢাকা কলেজে এক শিক্ষার্থীকে মারধর


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও সীমিত সংখ্যক যেমন ৫০ টি কলেজে অনার্স পড়ানোর অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। বাকি কলেজের একটি বড় অংশে এইচএসসি ও ডিগ্রী পাস থাকতে পারে। একই সাথে কিছু এক্সক্লুসিভ কলেজ হবে নটরডেম কলেজ যেখানে কেবল এইচএসসি পড়ানো হবে। এইগুলো মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিডার কলেজ হবে। এই দুটো কাজ করলে আমি আশা করি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় একটি যুগান্তকারী সুফল আসবে।


এসডি/