জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি, জাবিতে বিক্ষোভ-মহাসড়ক অবরোধ

আমরা ছাত্রজনতা পুনরায় রাস্তায় নামবো
বিজ্ঞাপন
জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনি ও দোসরদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে 'জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ' জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ছবি চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে এসে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
বিজ্ঞাপন
এই সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের "আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে", "একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন", "জাস্টিস জাস্টিস, উই অন জাস্টিস", "ছাত্রজনতার একশন, ডাইরেক্ট একশন", "আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ", "খুনি হাসিনার কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও" ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করে বলেন, আজকে আমরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে গণঅদ্ভুত্থান যে শেষ হয়নি তার জানান দিচ্ছি। আমাদের তিন দফা দাবি যদি সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন না হয় আমরা স্বৈরাচারী সরকারের সময় রক্ত দিয়েছি আবার রক্ত দিব, আমরা ছাত্রজনতা পুনরায় রাস্তায় নামবো।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে খুনী-দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা নিশ্চিত করা, সাত দিনের মধ্যে সারাদেশের খুনী-দোসরদের গ্রেফতার নিশ্চিত করা এবং তিন মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।
বিজ্ঞাপন
এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খালেদ জুবায়ের শাবাব বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে চালানো গণহত্যায় জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী যারা জড়িত ছিলো তারা এখনো বাইরে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করছে। বিজয়ের ৬৮ দিন পরেও আমরা দেখছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিচারের এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা করেনি। আমরা বলে দিতে চাই, শহীদ ও আহত ভাই-বোনদের রক্তের সাথে আমরা কোনো ধরনের বেঈমানী সহ্য করবো না। অনতিবিলম্বে খুনি ও দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খালেদ জুবায়ের শাবাব বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে চালানো গণহত্যায় জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী যারা জড়িত ছিলো তারা এখনো বাইরে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করছে। বিজয়ের ৬৮ দিন পরেও আমরা দেখছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিচারের এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা করেনি। আমরা বলে দিতে চাই, শহীদ ও আহত ভাই-বোনদের রক্তের সাথে আমরা কোনো ধরনের বেঈমানী সহ্য করবো না। অনতিবিলম্বে খুনি ও দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব বলেন, জুলাই হত্যার খুনিরা বিভিন্নভাবে ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতেছে এবং অনেকেই ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করতেছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ও মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা আনতে হবে। ১৫ জুলাই যারা বহিরাহত এনে ক্যাম্পাসে হামলা চালাল তাদের একজনও গ্রেফতার হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের গ্রেফতারে আওতায় আনতে হবে। এছাড়াও শামীম মোল্লাহ তার জবানবন্দিতে ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় জড়িত একজন শিক্ষকের নাম বলে গেছেন, তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি। সেই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনতে হবে।
জুলাইয়ে শহীদ আলিফের পিতা বলেন, পিতার ঘাড়ে সন্তানের লাশ, এর থেকে বড় কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না। এক হাজারের ও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছে কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও তাদেরকে এখনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি। সাভারেও অনেকে শহিদ হয়েছে কিন্তু একজন আসামীকেও এখনো ধরা হয়নি। এছাড়াও জুলাই হত্যার খুনিরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ যুবলীগ বুক ফুলিয়ে হাটছে। আমার ছেলে শহিদ হয়েছেন আমি তার সহযোদ্ধা ছিলাম এখন আমার ছেলে আন্দোলনে যোগ দিতে পারবে না কিন্তু আমি আন্দোলনে যোগ দেব। প্রয়োজনে দেশের জন্য আবারও নিজের বুক পেতে দিয়ে শহীদ হব।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
শহীদ শ্রাবন গাজীর পিতা বলেন, এই আন্দোলনে পুলিশ বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে যেভাবে ছাত্রদের উপর গুলি চালিয়েছে এতে অনেক মানুষ শহিদ হয়েছে। এতে আমার ছেলে শ্রাবন গাজী এই সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। আমার দাবি একটাই এই সন্ত্রাসী বাহিনীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এমএল/