বাংলাদেশের প্রতি চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে: চীনা রাষ্ট্রদূত


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:১৬ অপরাহ্ন, ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২৪


বাংলাদেশের প্রতি চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে: চীনা রাষ্ট্রদূত
ছবি: সংগৃহীত

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরে যে কোনো পরিবর্তন সত্ত্বেও বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বেইজিংয়ের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে। 


চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।


চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত রয়েছে।


আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই, সতর্ক থাকবে পুলিশ: আইজিপি


তিনি বলেন, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার করবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটাবে।


তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশিদের ছাড়া আর কারও দেশটির উন্নয়নের পথ বেছে নেওয়ার অধিকার নেই।


রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান-এই নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।


তিনি বলেন, একটি জাতি তখনই সমৃদ্ধ হবে যখন তার তরুণরা উন্নতি লাভ করবে। তরুণরাই সবচেয়ে উদ্যমী এবং স্বপ্নে ভরা। যুবকরাই আশা এবং তারাই হবে ভবিষ্যতের নেতা। যুবকরা একটি উল্লেখযোগ্য সময়ে বাস করছে, এবং তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল সম্ভাবনা উপভোগ করছে।


আরও পড়ুন: আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ নির্দেশনা


ইয়াও ওয়েন বলেন আমি আশা করি তরুণরা চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতায় নিজেদের নিবেদিত এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বন্ধুত্বের মশাল প্রবাহিত করবে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য চীন একতরফাভাবে তার বাজার খুলে দেওয়ার এবং বাংলাদেশকে ১০০ শতাংশ করযোগ্য আইটেমের ওপর শূন্য-শুল্ক হার ধার্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, আগামী ১ ডিসেম্বর হতে বাংলাদেশ থেকে চীন সিরিয়াল, চিনি, ভোজ্যতেল, রাবার ও রাবার পণ্য, কাঠজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কাগজ ও কাগজের পণ্য, উল ও সুতা আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে। এ ছাড়া চীন বাংলাদেশ থেকে তাজা আম আমদানি করবে।


রাষ্ট্রদূত বলেন, বন্যা মোকাবিলায়, চীন বাংলাদেশকে উদ্ধার সুবিধা এবং সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত দেড় মাসে, চীনা উদ্যোগগুলো আট কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যত এবং এরসঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চীন যে আস্থা রাখে তার গুরুত্ব তুলে ধরে।


এ ছাড়া সাম্প্রতিক গণ-আন্দেলনে আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা দিতে চীন জাতীয় জরুরি মেডিকেল টিম পাঠিয়েছে বলেও তিনি জানান।


আরও পড়ুন: নির্বাচনে লড়বেন কি না, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা


আগামী বছর ‘চীন-বাংলাদেশ জনগণের পরস্পরের মধ্যে বিনিময়ের বছর’ হবে উল্লেখ করে ইয়াও ওয়েন বলেন, এ সময় দূতাবাস রাজনৈতিক বিনিময়, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, পর্যটন খাত, খেলাধুলা, জনস্বাস্থ্য, যুব, মহিলা, মিডিয়া এবং একাডেমিক বিনিময় খাতে বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।


সব উদযাপনের লক্ষ্য আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত করা, উভয় দেশের জনগণকে, বিশেষ করে তরুণদের আরও সুবিধা প্রদান করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী বছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে।


রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন আমাদের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে দৃঢ় করতে, বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ। সূত্র: বাসস


এমএল/