নির্বাচন কবে, জানালেন নতুন নির্বাচন কমিশনার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:২৯ অপরাহ্ন, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪


নির্বাচন কবে, জানালেন নতুন নির্বাচন কমিশনার
ফাইল ছবি

সদ্য শপথ নেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন বলেছেন, সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু নির্বাচন করতে গেলে আবশ্যকীয় কিছু সংস্কার তো করা লাগবেই। কিছু সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত অবাধ নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা হবে।


রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শপথগ্রহণ শেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানান তিনি।


নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এই দায়িত্বটাকে জীবনে বড় একটি অপরচুনিটি হিসেবে দেখছি। দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা ফ্রি-ফেয়ার একটি নির্বাচনের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছে। অনেক আন্দোলন করেছে বিগত বছরগুলোতে এবং অনেকে রক্ত দিয়েছে। আমি তাদের ফ্রি-ফেয়ার এবং গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এর জন্য আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব।


আরও পড়ুন: সম্পদের হিসাব জমা দিতে সময় পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা


নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমি এটি করতে পারব। আমার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে খুব শক্তিশালী একটি টিম রয়েছে। আমরা সবাই মিলে দেশবাসী এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নিয়ে এই জাতিকে সুন্দর একটি ভোটারমুখী নির্বাচন উপহার দেব।


এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, নির্বাচন কি সংস্কার কাজ শেষেই অনুষ্ঠিত হবে? জবাবে সিইসি বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু নির্বাচন করতে গেলে আবশ্যকীয় কিছু সংস্কার তো করা লাগবেই।


সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন করতে গেলে যারা ইয়াং জেনারেশন, যারা বছরের পর বছর ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে তাদের তো আমাদের ভোটার লিস্টে আনতে হবে। এখানে কিছু রিফর্ম দরকার এবং কোথায় কোথায় সংস্কার প্রয়োজন সেটি আশা করি আমরা খুব দ্রুত পাব, যেহেতু অলরেডি একটি সংস্কার কমিশন কাজ করছে।


রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আশ্বস্ত থাকুন। আমাদের নিয়ত সহি। যে রাজনৈতিক দলগুলো ১৫-১৬ বছর ধরে বলে আসছেন, আমরা ভোটের অধিকার চাই, তাদের আমরা সঙ্গে চাই। তাদের ডিমান্ড বাস্তবায়নে আমরা সহযোগিতা করব। আমরা জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ।


আরও পড়ুন: সামনে অজানা অনেক চ্যালেঞ্জ আছে: সিইসি


রিফর্ম এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দিনক্ষণ দিয়ে এখন কিছু বলা যাবে না। আগে আমি দায়িত্বটা বুঝে নিই।


এর আগে, রবিবার দুপুরে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনসহ ৪ নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।


নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহ্‌মদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।


তার আগে ২১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ওইদিন ইসি গঠনে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে অবসরপ্রাপ্ত সচিব এএমএম নাসির উদ্দীনকে প্রধান (সিইসি) করে গঠন করা হয় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।


গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে ইসি গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।


আরও পড়ুন: জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই: সিইসি


কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান (পিএসসি) মোবাশ্বের মোনেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।


পরে ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা দেওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ওই তালিকা থেকে ৫ জনকে নিয়ে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়।


এমএল/