গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১:৪১ অপরাহ্ন, ১৩ই জানুয়ারী ২০২৫
গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনকলে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেদিনই প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বিদায় নেবেন জো বাইডেন। আর এর আগেই গাজায় আটক থাকা বন্দিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রবিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে ফোনে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট কাণ্ড ফাঁসের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে টিউলিপ
দুই নেতা টেলিফোনে কথা বলার পর হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে লড়াই থামাতে এবং সেখানে আটক থাকা অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্ত করার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
হোয়াইট হাউসের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন “গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এই চুক্তির অধীনে লড়াই বন্ধ করার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি গাজায় আটক থাকা বন্দিদের প্রত্যাবর্তনের ওপরও জোর দিয়েছেন।”
অন্যদিকে নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অগ্রগতির বিষয়ে বাইডেন আপডেট করেছেন এবং বন্দি মুক্তির চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা প্রতিনিধিদলকে কাতারের রাজধানী দোহায় পাঠানোর কথা জানিয়েছেন বলে নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দুই নেতা লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর আঞ্চলিক পরিস্থিতির মৌলিক পরিবর্তন, সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন এবং এই অঞ্চলে ইরানের শক্তির দুর্বলতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
আরও পড়ুন: টিউলিপ সিদ্দিকের বিকল্প বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্য সরকার
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। এছাড়া গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
আরএক্স/