আ.লীগের নেতাদের দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য: তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নকে এজিদ বাহিনীর দমন-পীড়নের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কারবালার ময়দান থেকে শিক্ষা নিয়ে হোসাইনি আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
শনিবার (০৫ জুলাই) পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
ওই বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ বছরে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার সকল ভাওতাবাজীর নির্বাচন, মানুষের ভোটাধিকার হরন, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, সন্ত্রাস, হানাহানি ও দেশের টাকা বিদেশে পাচারসহ এক অবর্ণনীয় শোষণ ও জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ রেখে এবং তাকে সুচিকিৎসা বঞ্চিত করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দোয়া চাইলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
তিনি বলেন, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিষ্ঠুর আওয়ামী নেতাদের পৈশাচিক দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য। আজও ইমাম হোসেন (রা.) ও তার ঘনিষ্ঠজনদের আত্মদানের চেতনায় দেশে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আর কোনভাবেই যাতে নির্দয় অত্যাচারীর অভ্যুদয় না ঘটে সেজন্য ইমাম বাহিনীর যুদ্ধ আমাদেরকে সবসময় প্রতিরোধের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করবে।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য অত্যন্ত ঘটনাবহুল ও স্মরণীয় একটি দিন ১০ মহররম। বিশ্বের ইতিহাসে এই দিনটিতে অসংখ্য ঘটনা সংঘটিত হয়। তাই এই দিনটির মহিমা অসীম। এক বিয়োগান্তক বিষাদময় ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত এদিন-যা পবিত্র আশুরা হিসেবে পালন করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, অন্যায়-অবিচার জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) এ দিনে কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। এই দিন শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন। জাগতিক অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ইমাম হোসেন (রা.) এর আত্মত্যাগ বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মুসলমান ও বিশ্ববাসীর জন্য এক মহিমামণ্ডিত অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
আরও পড়ুন: জনগণের ভালোবাসা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই: মাসুদ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ইমাম হোসেনের কষ্ট ও শাহাদাত এবং ইসলাম বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি যে আত্মত্যাগ করেছিলেন, তা দুনিয়াতে এক বিশাল প্রেরণার উৎসস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে সৃষ্টিকর্তাকেন্দ্রিক ন্যায়বিচার, তাকওয়া, ত্যাগ ও মানবিক মর্যাদার মর্মবাণী প্রকাশিত হয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, হয়রত হোসেন (রা.) এর শাহাদাত অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে এক নজীরবিহীন আদর্শিক সংগ্রামের উদাহরণ। ক্ষমতার প্রতি নিবিড় নিবিষ্ট মোহে আচ্ছন্ন থেকে যারা ইনসাফ ও মানবতাকে ভুলুণ্ঠিত করেছিল তাদের বিরুদ্ধেই ইমাম বাহিনী যুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কারবালায় ইমাম বাহিনীর শাহাদাত বরণ সর্বকালে দেশে দেশে অত্যাচারীর কবল থেকে মুক্ত হতে নিপীড়িত মজলুম মানুষকে উদ্দীপ্ত করে আসছে।
তিনি বলেন, শহীদ হযরত ইমাম হোসেন (রা.) এবং তার শহীদ পরিবার ও সঙ্গীদের শাহাদাতের স্মরণে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
এমএল/