সাড়ে পাঁচ বছরে সড়কে ঝরেছে ৩৭ হাজার প্রাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২০ পিএম, ১০ই আগস্ট ২০২৫

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে ৩৪ হাজার ৮৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার ৩৮২ জন নিহত এবং ৫৯ হাজার ৫৯৭ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (১০ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রূপরেখা: সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরে সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর।
তিনি জানান, দেশের সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় মোট ১৮টি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, যা ২০২৫ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত তিন ধাপে বাস্তবায়নের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
স্বল্পমেয়াদি প্রস্তাব (২০২৫-২০২৭)
- জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল পুনর্গঠন
- বিআরটিএ, বিআরটিসি ও ডিটিসিএ-র শীর্ষপদে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ নিয়োগ
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় রোড টেস্ট ও সড়ক সম্পর্কিত প্রশ্ন অন্তর্ভুক্তি
- যানবাহনের আয়ুষ্কাল ও ডাম্পিং নীতিমালা প্রণয়ন
- সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও ট্রাফিক- পার্কিং ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন
- শিক্ষা ও সচেতনতা কার্যক্রমে বাজেট বরাদ্দ
- দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭০০ কোটি টাকার ট্রাস্ট ফান্ড
- প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ
মধ্যমেয়াদি প্রস্তাব (২০২৫-২০২৯)
- আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি (আইটিএস, জিপিএস, ক্যামেরা) বাধ্যতামূলক করা
- মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন দ্রুত প্রত্যাহার
- রুট রেশনালাইজেশন ও কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু
- স্কুল-কলেজে নিজস্ব বাস সার্ভিস বাধ্যতামূলক
- মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাব (২০২৫-২০৩১)
- রাজধানীতে বহুতল হাইড্রলিক পার্কিং স্টেশন
- ছোট যানবাহনের নিরাপত্তা উন্নয়ন ও নিবন্ধন ব্যবস্থা
- সড়ক, রেল ও নৌপথ একীভূত করে অভিন্ন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় গঠন
সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থা বহুস্তরে নৈরাজ্যের মধ্যে রয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব, অপরিকল্পিত নগরায়ন, দুর্বল অবকাঠামো, সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব ও জবাবদিহির অভাবের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি সবসময়ই বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চালকদের অবহেলা, দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর চাপ, গতিরোধকবিহীন দীর্ঘ সড়ক, যান্ত্রিক ত্রুটি, পথচারীদের অসচেতনতা এবং আইন অমান্যের প্রবণতা।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে কেবল অবকাঠামো উন্নয়ন যথেষ্ট নয়; মানুষের আচরণে পরিবর্তন, আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ, আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং প্রশাসনিক সমন্বয় প্রয়োজন। এজন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও, সিভিল সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
আরএক্স/