টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ অনেকটা ধারাবাহিক, ওয়ানডের হিসাব বাকি: সালাউদ্দিন
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮:৩৫ পিএম, ১৫ই আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশকে ওয়ানডে ফরম্যাটে কয়েক বছর আগেও অনেকটা ধারাবাহিক দল মনে করা হতো। ব্যাটিং ব্যর্থতায় পছন্দের সেই সংস্করণও এখন আর স্বস্তির জায়গায় নেই। এর বাইরে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্টেও বাংলাদেশ উন্নতির পথে বলা চলে না। সাম্প্রতিক সময়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দুই ফরম্যাটের র্যাঙ্কিংয়েই ১০ নম্বরে নেমে গেছে টাইগাররা। তবে কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মতে, টি-টোয়েন্টিতে শিষ্যরা এখন প্রায় ধারাবাহিক, হিসাব বাকি ওয়ানডে ফরম্যাটে!
বিশেষ করে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমনের আগ্রাসী খেলার ধরন আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে টাইগারদের এই সিনিয়র সহকারী কোচকে। ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে ইমন ও তামিম একসঙ্গে খেলছে। সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছে তারা। ফলে তারা ভয়হীন ক্রিকেট ও শট খেলতে পারে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে যে সাহস আর শট খেলতে হয়, সেটা তাদের মধ্যে আছে।’
আরও পড়ুন: ক্রীড়া উপদেষ্টা জানালেন ফারুককে বিসিবি থেকে সরানোর কারণ
সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, কেবল টেস্টের দরজা খোলা মুশফিকুর রহিমের সামনে। এর আগে অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল। সাকিব আল হাসান কেবল এক ফরম্যাটে দুয়ার খোলা রেখেছেন, তাও রয়েছে অনিশ্চয়তায়। সবমিলিয়ে বেশ কয়েকজন সিনিয়রের বিদায়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার কথা জানান কোচ সালাউদ্দিন, ‘যখন আমি প্রথম (কোচ হিসেবে) দলে আসি, মূল সমস্যা খোঁজার চেষ্টা চালাই। যেহেতু আমাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা নেই, আমাদের এখন শুরুটা ভালো করার জন্য ভালো ওপেনিং জুটি প্রয়োজন।’
সালাউদ্দিন বলেন ‘টেস্টে অনেকদিন পর সাদমান (ইসলাম) ভালো অবস্থায় আছে। আমরা আরেকজন ওপেনার খুঁজছি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে আমরা পাঁচ-ছয়জন ব্যাটার নিয়ে খেলি। আমাদের লোয়ার-অর্ডার ব্যাটারদের পারফরম্যান্স ভালো নয়। তাই একসঙ্গে সব পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, দ্রুত ছোট ছোট ফাইন টিউনিং দরকার। যদি ওপেনাররা সেট হয়ে যায়, তাহলে দল অনেক এগিয়ে যাবে। তাই একবারে সব বদল না করে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা ভালো’।
টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দল স্থিতিশীল বলেও দাবি সিনিয়র সহকারী কোচের, ‘আমাদের টেস্ট দল এখন অনেকটাই স্থির। দীর্ঘদিন ধরেই তারা একসঙ্গে আছে, সবার ভূমিকা পরিষ্কার। কে ব্যাট করবে, কে বল করবে, কে পেস আক্রমণ সামলাবে। খুব বেশি পরিবর্তন নেই, এবং ভবিষ্যতেও তেমন হবে না। টি-টোয়েন্টিতেও আমরা এখন প্রায় সেই ধারাবাহিকতায় পৌঁছে গেছি। কিন্তু ওয়ানডে দলের ক্ষেত্রে এখনও কিছু হিসাব-নিকাশ বাকি। এখানে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হয়। ওয়ানডেতে অভিজ্ঞদের ওপর নির্ভর করতে হয় বেশি। মিডল-অর্ডারে লম্বা সময় সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা খেলেছে। এখন সেই জায়গায় আমরা এখনও কাউকে স্থায়ীভাবে বসাতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি রোধে আইসিসির সাবেক কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিল বিসিবি
‘ওয়ানডেতে ভূমিকা বদলাতে হয় দ্রুত, উইকেট পড়লে একভাবে এবং না পড়লে আরেকভাবে। ১০ ওভারের পর একরকম, ৩০ ওভারের পর আরেক রকম। যা অভিজ্ঞতা থেকে আসে। একবার পরিস্থিতি পড়তে শিখলে এবং হিসাবমতো খেলতে পারলেই এই জায়গায় উন্নতি আসবে। ওয়ানডেকে আমাদের শক্তি বলা হলেও মিডল-অর্ডারের নতুন সেটআপে এখনও পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারিনি। চার, পাঁচ, ছয় নম্বর পজিশন গুরুত্বপূর্ণ। এখানে স্ট্রাইক ঘোরানো এবং ম্যাচের চাহিদা অনুযায়ী খেলা জরুরি। আগে এই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীলতা ছিল, এখন সেটা হঠাৎ করেই হারিয়ে গেছে। নতুনদের সময় লাগবে। টেস্ট বা টি-টোয়েন্টিতে আমরা ধারাবাহিক কারণ সবাই জানে তাদের ভূমিকা কী। ওয়ানডেতে একবার সেই স্তরে পৌঁছালে সব সহজ হয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফিটনেস ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ দল। এরপর তারা স্কিল ডেভলপমেন্ট ক্যাম্প শুরু করবে। পরবর্তীতে সিলেটে গিয়ে দ্বিতীয় ধাপে ক্যাম্প করে ৩০ আগস্ট থেকে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা। যা হবে ওই ফরম্যাটেরই এশিয়া কাপের প্রস্তুতি।
এমএল/