আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়ে মুখ খুলল দিল্লি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:২৮ এএম, ২১শে আগস্ট ২০২৫

ভারতে থেকে আওয়ামী লীগের ‘পলাতক’ নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন, এমনকি দিল্লি ও কলকাতায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় চালু করেছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। এবার এ বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২০ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগের সদস্যদের বাংলাদেশবিরোধী কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড বা ভারতের আইনের পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ভারত সরকার অবগত নয়।
তিনি আরও বলেন, ভারত সরকার অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যকলাপ ভারতীয় মাটি থেকে পরিচালিত হতে দেয় না।
আরও পড়ুন: ভারত, চীন ও রাশিয়ার ত্রিপাক্ষিক আলোচনা শিগগিরই
একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিটি ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করেন জয়সওয়াল।
মুখপাত্র আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নির্ধারণের জন্য শিগগিরই অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি।
মূলত, জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত দল আওয়ামী লীগ যেন ভারতে বসে অফিস খুলে কার্যক্রম চালাতে না পারে সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানানো পরই জয়সওয়ালের এই বিবৃতি এলো।
এর আগে, বুধবার (২০ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ’ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অফিস ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং কলকাতায় স্থাপনের খবরে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের পটভূমিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: টাকা নয়, প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে খাবার মেলে ক্যাফেতে
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধের কারণে একাধিক ফৌজদারি মামলায় পলাতক থাকা এ দলের বহু জ্যেষ্ঠ নেতা ভারতের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। এর আগে, ২১ জুলাই এক অজ্ঞাত এনজিওর আড়ালে এ নিষিদ্ধ দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা দিল্লি প্রেস ক্লাবে এক জনসংযোগ কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা করে এবং পরবর্তী সময়ে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের মাঝে প্রচারপত্র বিতরণ করে। এ পর্যন্ত ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে এ দলের কর্মকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা ভারতের মাটিতে পরিচালিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড—বিশেষত নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতা বা কর্মীরা ভারতের মাটিতে বৈধ বা অবৈধভাবে অবস্থান করে পরিচালিত কার্যকলাপ, যার মধ্যে অফিস স্থাপনও অন্তর্ভুক্ত—বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ। এ ধরনের ঘটনা পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ভারত-বাংলাদেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরের জন্যও গুরুতর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি এটি বাংলাদেশের জনমনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, যা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার চলমান প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।
এমএল/