নীতির পথে চলেই গড়তে হবে নতুন বাংলাদেশ: শিক্ষা উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৭ পিএম, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘স্কুল শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জনের প্রতিষ্ঠান নয়, নীতি-নৈতিকতা শেখারও প্রতিষ্ঠান’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর সি আর আবরার। জীবনের সব সিদ্ধান্ত নীতি-নৈতিকতার আলোকে নিতে হবে। জীবনে অনেক সময় অনেক প্রলোভন আসবে। কিন্তু সেই প্রলোভনের কাছে আত্মসমর্পণ না করে মর্যাদার সঙ্গে জীবন যাপন করতে হবে। সচেতন ও আত্মসম্মানজনক নাগরিক হওয়ার চেষ্টা সবসময় থাকতে হবে। এটাই আমার প্রত্যাশা বলে জানান তিনি।
শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী ফোর্থ ন্যাশনাল ইকো কার্নিভালের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
এ সময় সি আর আবরার বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তোমরা যোগ্য নাগরিক হিসেবে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে। জুলাইয়ে যে আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, নতুন করে আমরা যে শপথ নিয়েছি, সেই তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষা আমাদের এগিয়ে নেবে। শহরে দেয়াললিখন ও গ্রাফিটিগুলো থেকে প্রতিদিন দীক্ষা নিতে পারি। পরিবর্তন এসেছে, এখন সেই পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে তোমাদের নিজেদের তৈরি হতে হবে।
আরও পড়ুন: পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা
তিনি ছাত্রদের উদ্দেশে আরও বলেন, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন জীবনের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে। ভবিষ্যৎ জীবন কেমন হবে তা নির্ভর করে ছাত্রজীবনে কতটা পরিশ্রম করা হয়েছে তার ওপর। ছাত্রজীবন শেষ হয়ে গেলে গড়ে তোলার অনেকটা সুযোগ শেষ হয়ে যায়। তাই এখনই যতখানি পরিশ্রম করবে, সেটাই ভবিষ্যৎ জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই আমি বলব—প্লিজ টেক অ্যাডভান্টেজ অফ দি অপরচুনিটিজ ইউ হ্যাভ গট। এই সুযোগগুলো তোমাদের উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেবে।
তিনি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গেও সতর্ক করে আরও বলেন, আমরা এমন এক পৃথিবীতে আছি, যেখানে প্রযুক্তি ও জ্ঞানে অগ্রগতি হলেও প্রকৃতি ও পরিবেশ ভীষণভাবে বিপর্যস্ত। কম্পিউটার, তথ্যপ্রযুক্তি, চিকিৎসা, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু একই সঙ্গে ভোগবাদীতায় আমরা প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করেছি। সম্প্রতি পত্রিকায় পড়েছি, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিই এর প্রধান কারণ। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে ফেলছি। কাজগুলো আমাদের প্রজন্মের করার কথা ছিল, আমরা করিনি। তাই বলা যায়, এ ক্ষেত্রে আমরা অপরাধী।
এ পরিস্থিতিতে পরিবেশ সচেতনতার উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এ ইকো কার্নিভাল অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজন হবে। এতে করে তরুণদের মধ্যে প্রকৃতি, ইকোলজি ও পরিবেশবিদ্যা সম্পর্কিত জ্ঞান ছড়িয়ে পড়বে। আমরা কমিউনিটি পর্যায়ে বুঝতে পারব আমাদের কী করা উচিত আর কী না করা উচিত। প্রতিদিন একে অপরকে জানাতে পারব। তাই ইকো কার্নিভাল পরিবেশ সচেতনতায় বড় ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে অনেকে জড়াচ্ছে: আসিফ মাহমুদ
দুই দিনব্যাপী ফোর্থ ন্যাশনাল ইকো কার্নিভালের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অতিথিদের গাছের চারা উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মডারেটর হাসান আলি। ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মোট পাঁচটি প্রধান পুরস্কার দেওয়া হয়। পাশাপাশি সব অংশগ্রহণকারীকে গাছের চারা পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সম্মানিত অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করে সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাদার বেনেডিক্ট রোজারিও (CSC), প্রিফেক্ট অব ডিসিপ্লিন, সেন্ট জোসেফ ইন্টারন্যাশনাল কেমব্রিজ স্কুল। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ব্রাদার প্লাসিড পিটার রিবেইরো (CSC)।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে অনেকে জড়াচ্ছে: আসিফ মাহমুদ

রাষ্ট্রের দায়িত্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা: ধর্ম উপদেষ্টা

ষড়যন্ত্র থেমে নেই, জনগণই প্রতিরোধ করবে: উপদেষ্টা আদিলুর
