লজের ফ্যানে ঝুলে ছিল পরকীয়া প্রেমিক যুগলের মরদেহ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
আত্মঘাতী পরকীয়া প্রেমিক যুগলের দেহ উদ্ধার। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলির তারকেশ্বরের একটি লজে ঝুলন্ত অবস্থায় তাদের দেখা যায়। যুগলের মৃত্যুর খবর শুক্রবার বেলা বাড়তেই জানাজানি হয়। পরে মন্তেশ্বর থানার লোহার গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।
আত্মঘাতী যুগল হলেন বাপন ঘোষ (২৪) ও পূর্জা মাঝি(২৫)। মন্তেশ্বর থানার লোহার গ্রামে তাঁদের বাড়ি। বাপন ঘোষ ও পূর্জা মাঝি দুজনেই বিবাহিত। দুটি করে সন্তান ও ছিল তাঁদের।
গতকাল শুক্রবার (২২ এপ্রিল) তারকেশ্বর থেকে মন্তেশ্বর থানার পুলিশের কাছে লোহার গ্রামের বাসিন্দা ওই যুগলের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়েই মন্তেশ্বর থানার পুলিশ মৃতদের পরিবারকে দুঃসংবাদটি জানায়।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে পূর্জার পূর্ব বর্ধমানের টুবগ্রামে বিয়ে হয়। তবে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হত না তাঁর। দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়ি লোহার গ্রামে চলে আসে পূর্জা। মেয়েদের বাবার বাড়িতে রেখে একমাস আগেই সে কাজের জন্য বেরিয়ে যায়। অন্যদিকে, মিষ্টি তৈরির কারিগর হিসেবে তারকেশ্বরের একটি দোকানে কাজ করতেন বাপন। হঠাৎ করে সেই কাজ ছেড়ে দেন। বারুইপাড়া এলাকায় মিষ্টি দোকানে কাজে যোগ দেন। এরপর তিন সপ্তাহের বেশি সময় নিখোঁজ হয়ে যান বাপন। চিন্তায় পড়ে যায় তাঁর পরিবার। তাঁর খোঁজ পেতেই পরিবারের লোকজন খুজতে থাকেন।
বাপনের স্ত্রী গৌরী সাংবাদিকদের জানান, ইতিমধ্যে জানতে পারেন তাঁর স্বামীর পরকীয়ার কথা। দেড় মাস আগে থেকে স্বামীর ফোনে পূর্জা নামে ওই মেয়েটির মেসেজ আসে। ফোন আসে। তাতেই সন্দেহ হয়। একটু খোঁজখবর নিয়ে ওদের সম্পর্কের কথা জানতে পারি।
বাপনের মা সুজাতা ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, ওই মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েই অশান্তি সৃষ্টি হয়। ছেলেকে অনেকবার বুঝানো হয়েছে। ইতিমধ্যে বাপনের মোবাইল ভেঙ্গে যায়। গত মঙ্গলবার ছেলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। তাই ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।
তারকেশ্বরের কতৃর্পক্ষ সাংবাদিকদের জানান, গত বৃহস্পতিবার স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে লজের ঘর ভাড়া নেয়। তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন দুজনে। শুক্রবার লজ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। তবে বেলা বাড়লেও যুগলের সাড়া শব্দ পাওয়া যায়না। তাই বাধ্য হয়ে ডাকাডাকি শুরু হয়। তবে কোনও প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি। ঘরে উঁকি দেন লজের কর্মীরা। তাঁরা দেখেন সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন বাপন ও পূর্জা। তারকেশ্বর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মঘাতি মনে হচ্ছে। তবে বিশদ তদন্তে মুল ঘটনা সামনে আসবে।
পূর্জার পরিচিতদের দাবি, কাজে বেরনোর নামে বাপনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি। তবে পূর্জার বোন রাধারানী মাঝির দাবি, সম্পর্কের কথা জানতেন না তাঁরা।
এসএ/