বাসাতেই আছি, দু-এক দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করবো: ডন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহের রহস্যজনক মৃত্যুর ২৯ বছর পর নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের হওয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে তার সহকর্মী ও খলনায়ক ডন।
বিজ্ঞাপন
ঢাকার রমনা থানায় গত ২১ অক্টোবর দায়ের হওয়া মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা ডনসহ আরও কয়েকজন।
ডন সোমবার (২৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সবাই বলছে আমি নাকি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ৩০ বছর পালাইনি, এখন কেন পালাবো? বাসাতেই আছি। ভাবছি, দু-এক দিনের মধ্যেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবো। ৩০ বছর ধরে যন্ত্রণা ভোগ করছি, এর একটা সুরাহা দরকার।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ‘যে চলচ্চিত্র ভালোবেসে ঘর ছেড়েছি, অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার আশায় সালমান শাহর সঙ্গে জুটি গড়েছিলাম। মা-বউয়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত মানুষটির সুখ-দুঃখের সাথী হয়েছি। চেষ্টা করেছি তাকে আনন্দে রাখার, কিন্তু সালমানকে ভালোবেসে আমার ক্যারিয়ারের বারোটা বেজেছে। আজও ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। সালমানকে ভালোবেসেছি বলেই জীবনের প্রচণ্ড ঝড় মেনে নিয়েছি।’
ডন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘সালমানকে ভালোবাসার যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছি না। আমিও মানুষ, আমারও বাঁচতে ইচ্ছে করে। সালমানকে ভালোবেসে অনেকেই আত্মহত্যা করেছে, আমি করিনি। এইটিই কি আমার অপরাধ? আমি আত্মহত্যা করলেই কি সবাই খুশি হতো? উপরে একজন আছেন, তিনি সব দেখেন। সত্য একদিন প্রকাশিত হবে, তবে আমি দেখব কিনা জানি না।’
ডন স্মৃতিচারণ করে জানান, ‘৩০ আগস্ট আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসি। সালমান বলেছিল পরিচালক শিবলী সাদিককে জানাতে যে সে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসে ‘আনন্দ অশ্রু’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নেবে। আমি খবরটা পৌঁছে দিই। দুই দিনের ফাঁকে ভাবলাম বগুড়ায় ঘুরে আসি, কিন্তু বাস ধর্মঘটের কারণে ঢাকায় ফিরতে পারিনি। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর ঝড়ের মতো খবর— সালমান শাহ আর নেই।’
বিজ্ঞাপন
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করা সালমান শাহ মাত্র সাড়ে তিন বছরের অভিনয়কালে ২৭টি চলচ্চিত্রে দর্শকের মন জয় করেছেন। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘দেন মোহর’, ‘তোমাকে চাই’, ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’।
ডনের ভাষ্য ও স্মৃতিচারণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সালমান শাহর সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধু পেশাদার জুটি নয়, ছিল মানসিক বন্ধনও। হত্যার মামলার নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ায় চলচ্চিত্রি মহল এবং দর্শকদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।








