বল এখন আফগানিস্তানের কোর্টে : শাহবাজ শরফি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত সংঘাতের বিষয়ে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) “ইসলামাবাদ আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তার আগে কাবুলকে ইসলামাবাদের ‘ন্যায্য ও যৌক্তিক’ শর্তগুলো পূরণে রাজি হতে হবে বলে জানান তিনি।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ৪৮ ঘণ্টার জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হয়।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতি তালেবানের অনুরোধে ও উভয় পক্ষের সম্মতিতে ঘোষণা করা হয়। এর আগে সপ্তাহব্যাপী দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলি ও বিমান হামলার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রিসভায় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বলেন, ‘আফগান পক্ষ যুদ্ধবিরতির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছে। (বুধবার) আমরা ৪৮ ঘণ্টার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছি। বার্তা পাঠানো হয়েছে— যদি তারা আলোচনার মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক শর্তগুলো পূরণ করতে চায়, তাহলে আমরা প্রস্তুত। এখন বল তাদের কোর্টে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আফগান পক্ষ আন্তরিক হয়, তাহলে তারা নিজেরাই আলোচনার উদ্যোগ নেবে। আমাদের মিত্র দেশগুলো, বিশেষ করে কাতার, এই পরিস্থিতি প্রশমনে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।’
বিজ্ঞাপন
শাহবাজ আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের চলমান উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে পৌঁছাবে এবং আফগান মাটি থেকে ‘ফিতনা আল-খারিজ’ (নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি) সম্পূর্ণ নির্মূল হবে যাতে আফগান ভূখণ্ড আর সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল না হয়।
তিনি বলেন, ‘যদি এই যুদ্ধবিরতি কেবল সময়ক্ষেপণের কৌশল হয়, তাহলে আমরা তা মেনে নেব না।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা অতীতে বহুবার কাবুল সফর করে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সম্পর্কের টানাপড়েন নিরসন সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞাপন
তিনি উল্লেখ করেন, ‘দুঃখজনকভাবে, যখন পাকিস্তানের ওপর এই হামলা চলছিল, তখন ভারতের সরাসরি উসকানিতে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির মুত্তাকি দিল্লিতে ছিলেন। ফলে আমাদের বাধ্য হয়ে কঠোর জবাব দিতে হয়েছে।’
শাহবাজ আরও জানান, মিসরে তার সঙ্গে আলোচনায় কাতারের আমির পুরো ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের প্রশংসা করে বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বহু সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাই সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিক্রিয়া দেখানো জরুরি ছিল।’
একই সঙ্গে তিনি গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়েও কথা বলেন। শাহবাজ বলেন, ‘গাজায় ভয়াবহ প্রাণহানির পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া একটি বড় অর্জন। দেশে কেউ কেউ এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে, যা দুঃখজনক।’
তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো— কাতার, সৌদি আরব, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
বিজ্ঞাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র পাওয়া উচিত। পাকিস্তান সেই লক্ষ্য অর্জনে সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।