২৪ বছর আগের অজ্ঞাত লাশের রহস্য উন্মোচিত

প্রায় ভুলে যাওয়া এক খুনের মামলার রহস্য অবশেষে উন্মোচিত হলো দীর্ঘ ২৪ বছর পর। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কর্ণাটকের কোনানাকালু রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে পাওয়া এক অজ্ঞাত পুরুষের লাশ নিয়ে বছরের পর বছর তদন্ত চললেও কোনো সুরাহা মিলছিল না। অবশেষে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে সেই রহস্যের মীমাংসা সম্ভব হলো একেবারে মাঠপর্যায়ের তদন্ত আর অপ্রত্যাশিত এক সূত্রে—দুটি ডিমের খাঁচা!
বিজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক তদন্তে জানা যায়, লাশটি প্রথম দেখেন এক বনরক্ষী। মৃতদেহের পকেটে পাওয়া পাসবুক ও কয়েকটি ফোন নম্বর দেখে ধারণা করা হয়েছিল তিনি শিবামোগ্গার এক ব্যবসায়ী। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, খুনিরা এসটিডি বুথ ও ল্যান্ডলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল—ফলে ডিজিটাল তথ্যের কোনো ব্যবহার ছিল না, আর সেখানেই আটকে যায় তদন্ত।
২০২৫ সালে ফাইলটি আবার খোলার পর পুলিশ ছয়টি জেলার বিভিন্ন ফোনবুথ থেকে করা পুরোনো কলের রেকর্ড খুঁজে বের করে তদন্ত শুরু করে। প্রত্যেকটি নম্বর ধরে আলাদা আলাদা টিম অনুসন্ধান চালায়—পুরো প্রক্রিয়াটাই ছিল পুরোনো ঢঙের গোয়েন্দাগিরির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
বিজ্ঞাপন
এক পর্যায়ে বেঙ্গালুরুর এক দোকান থেকে কেনা দুইটি ডিমের খাঁচাকে কেন্দ্র করে নতুন সূত্র পায় পুলিশ। সাধারণ দেখতে এই খাঁচাগুলো থেকেই পাওয়া যায় এক সন্দেহভাজনের নতুন ঠিকানা। এখানেই নতুন করে খুলতে থাকে রহস্যের জট।
তদন্তে উঠে আসে, নিহত ব্যক্তি ছিলেন একজন লেখক। তিনি ও তার চালক প্রায় ১০ লাখ রুপি সংগ্রহ করে ফিরছিলেন। কিন্তু নিখোঁজ হন লেখক—বেঁচে ফেরেন শুধু চালক। পরে জানা যায়, ওই টাকাই ছিল হত্যার মূল উদ্দেশ্য। পরিকল্পিতভাবে লেখককে হত্যা করে লাশ জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
শেষ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তি এবং তার দুই সহযোগী স্বীকার করেন, পুরো ঘটনাই ছিল পূর্বপরিকল্পিত খুন।
মামলার দায়িত্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সুপার বলেন, ডিজিটাল প্রমাণ না থাকলেও নিষ্ঠা, সময় ও ধৈর্য নিয়ে পুরোনো ধাঁচের অনুসন্ধান করলেই জটিল মামলার সমাধান সম্ভব।
এদিকে আদালতের নথিপত্রে দেখা যায়, ২০০৫ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। তাদের একজন কিছু সময় পলাতক থাকলেও ২০১৪ সালে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়।








