ইন্টারনেটে বিদ্বেষ ছড়ালে জরিমানাসহ কারাদণ্ড

টেলিযোগাযোগ বা বেতার মাধ্যম এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যদি কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক বা জাতিগত ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে, তবে সে ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা ৯৯ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
বিজ্ঞাপন
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বুধবার ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ খসড়া প্রকাশ করেছে। খসড়াটি নাগরিক ও অংশীদারদের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশের ধারা ৬৬ক অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে যদি কেউ দেশের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ণ করে, সাম্প্রদায়িক ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে—যা সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নির্দেশ দেয়, দেশের সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে বা টেলিযোগাযোগ সেবায় হ্যাকিং বা ক্ষতি সাধন করে—তাহলে সে অপরাধী বিবেচিত হবেন।
বিজ্ঞাপন
এই ধারা অনুযায়ী অপরাধীকে অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড, ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া কোনো টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী যদি কমিশনের নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হন, তবে তাকে ও অনধিক ৫ বছর বা ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় করা হবে।
ধারা ৬৯(ক) অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ বা বেতার মাধ্যম ব্যবহার করে অশ্লীল, হুমকিমূলক বা অপমানজনক বার্তা প্রেরণ বা আদেশ দেওয়া হলে প্রেরণকারী ও প্রস্তাবক উভয় দণ্ডনীয় হবেন। সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড বা ১.৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে প্রেরণকারী ৫ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
ধারা ৭০ অনুযায়ী, যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত বারবার টেলিফোন করে বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে দোষী ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের মুখোমুখি হবেন।
বিজ্ঞাপন
প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাইবার সুরক্ষা আইন প্রযোজ্য হবে। খসড়ার বিষয়ে মতামত ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ই-মেইল বা ডাকযোগে পাঠানো যাবে।
এই নতুন বিধানটি সরকারের পক্ষ থেকে টেলিযোগাযোগ এবং অনলাইন সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামাজিক শান্তি ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।








