Logo

তারেক রহমানের নিরাপত্তায় কঠোর তদারকিতে ডিএমপি সদরদপ্তর

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৭
11Shares
তারেক রহমানের নিরাপত্তায় কঠোর তদারকিতে ডিএমপি সদরদপ্তর
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তার আগমন উপলক্ষে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুরো নিরাপত্তা কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে তদারকি করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদরদপ্তর, আর মাঠপর্যায়ে মোতায়েন থাকবে কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) সমন্বিতভাবে কাজ করবে। তারেক রহমানের বাসভবন, কার্যালয় এলাকা ও চলাচলের প্রতিটি পথকে ঘিরে আলাদা আলাদা স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রাজধানীর যেসব সড়ক ও এলাকায় ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি, সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে আরও সদস্য নামানোর প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র আরও জানায়, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন। সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা করে সেসব বৈঠক থেকেই চূড়ান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি সদরদপ্তরের সরাসরি তদারকিতে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলেও সার্বিক নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব থাকবে বিএনপির নিজস্ব সিএসএফের ওপর। পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবে।

বিজ্ঞাপন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকেই পুলিশের বাড়তি তৎপরতা শুরু হয়েছে। সাদা পোশাকের পুলিশ, গোয়েন্দা সদস্য ও পোশাকধারী পুলিশ বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন করছেন। ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত পুরো পথজুড়ে প্রায় কয়েক হাজার পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্য মোতায়েন থাকবে।

বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত প্রতিটি থানার আওতায় থাকবে বিশেষ পুলিশি নজরদারি। সঙ্গে থাকবে পুলিশের ‘স্পেশাল স্কট’ টিম। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বর্তমানে একাধিক চেকপোস্ট চালু রয়েছে, যেখানে ২৪ ঘণ্টা বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে গুলশান এলাকায় আরও কয়েকটি চেকপোস্ট যুক্ত হতে পারে। তার বাসভবন ও আশপাশে প্রতিদিন শতাধিক পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য দায়িত্বে থাকবেন। চলাচলের সময় নিরাপত্তা চাওয়া হলে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি কেন্দ্রীয়ভাবে সদরদপ্তর থেকে পরিচালিত হবে। সেখান থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী গুলশান ও উত্তরা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করবেন।

বিজ্ঞাপন

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী জানান, কোনো একটি নির্দিষ্ট ইউনিট নয়, বরং ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব বণ্টনের মাধ্যমে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসায় থাকার কথা রয়েছে তারেক রহমানের, যা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’র পাশেই অবস্থিত। ওই বাসা পুরোপুরি প্রস্তুত না হলে তিনি অস্থায়ীভাবে ফিরোজায় উঠতে পারেন। দেশে ফেরার পর গুলশান ৮৬ নম্বর রোডে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকেই তিনি দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

গুলশান বিভাগ সূত্র জানায়, বাসভবন ও কার্যালয় কাছাকাছি হওয়ায় উভয় স্থানকে একই নিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিকল্পনা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তা স্থগিত করা হয়। তখনো কেবল পরিকল্পনা পর্যায়ে থাকায় মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন শুরু হয়নি।

এদিকে রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে প্রতিদিন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, যা পরিস্থিতি অনুযায়ী আরও বাড়তে পারে। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় বর্তমানে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স দায়িত্ব পালন করছে। প্রয়োজনে তারেক রহমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে এসএসএফ, সিএসএফ ও পুলিশের সমন্বিত কাঠামো আরও শক্তিশালী করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি সূত্র জানায়, তারেক রহমান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। দেশে ফেরার জন্য তিনি ইতোমধ্যে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেছেন এবং টিকিট কাটা হয়েছে। এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দলীয়ভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তাজনিত কারণে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া অন্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কেবল বৈধ টিকিটধারী যাত্রীরাই বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD