জিয়া উদ্যানে খালেদা জিয়ার সমাধিস্থল পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে দাফন করা হবে। সে লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটের দিকে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে নির্ধারিত কবরের স্থান পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
পরিদর্শনকালে তিনি কবর খননের সার্বিক প্রস্তুতি ও অগ্রগতি ঘুরে দেখেন। এ সময় সাংবাদিকরা তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করেই স্থান ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে ফজরের নামাজের পর বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। তিনি গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায়। বিএনপির তথ্য অনুযায়ী তার জন্মস্থান জলপাইগুড়ি হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। তার পিতা ইস্কান্দার মজুমদার এবং মাতা তৈয়বা মজুমদার। পারিবারিকভাবে তারা ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও স্থায়ীভাবে দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৯৬০ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে তিনি ফার্স্ট লেডি হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর সংকটময় সময়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন খালেদা জিয়া। ১৯৮২ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে ভাইস-চেয়ারপারসন এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব নেন।
বিজ্ঞাপন
আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এ সময় তাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার ও গৃহবন্দী করা হয়।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য মেলায় বাস সার্ভিস দেবে বিআরটিসি
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন এবং তার নেতৃত্বে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা ও প্রশাসনিক সংস্কারে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য। পরবর্তীতে ২০০১ সালের নির্বাচনে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া সংসদীয় নির্বাচনে যে আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, সবগুলোতেই জয়ী হওয়ার অনন্য রেকর্ড গড়েছেন। আন্তর্জাতিক পরিসরেও গণতন্ত্রে অবদানের জন্য তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন।
২০১৮ সালে একটি মামলার রায়ে কারাবন্দী হলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সব মামলা থেকে খালাস পান বিএনপি চেয়ারপারসন। তার মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিতে এক দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান হলো।







