পলাতক ৮৭ পুলিশ কর্মকর্তা, রেড নোটিশে সাড়া নেই ইন্টারপোলের

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৮৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন ডিআইজি, এসপি ও অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। এদের অধিকাংশই পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশের আবেদন করা হলেও এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে-পরে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো এবং গুলির নির্দেশদাতাদের বিচারের দাবি উঠেছিল দেশজুড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় এই ৮৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি শহরে আলোচিত ডিবিপ্রধান ও সাবেক ডিআইজি হারুন অর রশিদের অবস্থানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান রয়েছেন যুক্তরাজ্যে। প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও সৈয়দ নুরুল ইসলাম অবস্থান করছেন ভারতে। দেশে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ একাধিক মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
এ বিষয়ে পুলিশের এআইজি শাহাদাত হোসাইন বলেন, “যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশের আবেদন করা হয়েছে, তারা অনেক সময় এমন দেশে অবস্থান করেন যেখানে তাদের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। কেউ কেউ রাজনৈতিক আশ্রয়ও পেতে পারেন। এ অবস্থায় মানবাধিকার ও রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে ইন্টারপোল অনেক সময় রেড নোটিশ জারি করতে দেরি করে বা করে না। ফলে আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনা রাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।”
বিজ্ঞাপন
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোহেল রানা বলেন, “সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী কর্মস্থল ত্যাগ করা বা আত্মগোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করতে হবে। এর জন্য কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা অপরিহার্য।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাক্ট ১৮৬১-এর ২৯ ধারায় এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পর্যায়ের ৪০ জন কর্মকর্তার পদক বাতিল করে এবং ৫৫ জনকে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।