৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি: হাসিনা-কাদেরসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে অনিয়ম ও সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সাতজন সাবেক মন্ত্রী ও সচিবসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুদকের সহকারী পরিচালক তানজিল আহমেদ বাদী হয়ে সংস্থার ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির হাসান।
বিজ্ঞাপন
মামলায় আসামি করা হয়েছে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, উপসচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও পরিচালক ইকরাম ইকবালকে।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৬ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের জন্য একক উৎসভিত্তিক দরপত্রে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে (সিএনএস) দায়িত্ব দেওয়ার আগে পূর্বের টেন্ডার বাতিল করা হয়। অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে দরপত্র বা আলোচনার সুযোগ না দিয়েই সিএনএসকে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয় আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ হারে।
ফলস্বরূপ, সিএনএস লিমিটেড পাঁচ বছরে ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বেশি বিল পায়, যা একই মেয়াদের অন্য কোম্পানিগুলোর তুলনায় বহু গুণ বেশি। তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সিদ্ধান্তের কারণে সরকারের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকা।
বিজ্ঞাপন
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সিএনএস লিমিটেডের পরিচালকরা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আত্মসাতের মাধ্যমে নিজেদের আর্থিকভাবে লাভবান করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ সালের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।