Logo

এনা পরিবহনের মালিকের বিরুদ্ধে ১০৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১৫:৪৫
38Shares
এনা পরিবহনের মালিকের বিরুদ্ধে ১০৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এনা ট্রান্সপোর্টের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে ১০৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি চাঁদাবাজির মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ উপার্জন করেছিলেন।

সিআইডি জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এনায়েত উল্লাহ ও তার সহযোগীরা চাঁদাবাজির মাধ্যমে অসংখ্য সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এ প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, এনায়েত উল্লাহ আশির দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিবহন খাতে পা রেখেছিলেন। পার্টনারশিপে একটি পুরাতন বাস কিনে তার ব্যবসা শুরু হলেও কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি প্রায় ২০টি বাসের মালিক হয়ে ওঠেন এবং ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেন।

তার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক পরিচয় তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বেপরোয়া করে তুলেছিল। ২০০৮ থেকে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ধারাবাহিকভাবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময়ে তিনি পরিবহন খাতে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।

জসীম উদ্দিন খান জানান, চাঁদাবাজি কার্যক্রমগুলো অত্যন্ত সংগঠিত ও ভয়ভীতি-ভিত্তিক ছিল। এনায়েত উল্লাহ ও তার সহযোগীরা সিন্ডিকেট গঠন করে বিভিন্ন অজুহাতে বাস মালিকদের কাছ থেকে প্রকাশ্য চাঁদা আদায় করতেন। দৈনিক ও মাসিক চাঁদার পাশাপাশি নতুন বাসের জন্য মালিকদের ২ থেকে ৫ লাখ টাকা দিতে বাধ্য করা হতো। নতুন বাসের অংশীদারি না দিলে বাস সড়কে চলত না।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার প্রতিটি বাস টার্মিনাল, সারা দেশের বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি থেকেও জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হতো। সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী ব্যবহার করে পরিবহন খাতে ত্রাসের রাজত্ব চালানো হতো।

সিআইডি অনুসন্ধানে দেখা যায়, ধানমন্ডির দুইটি ফ্ল্যাট এবং রূপগঞ্জের দুইটি প্লট ক্রোক করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এছাড়াও ৫৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে, যার স্থিতি প্রায় ১১০ কোটি টাকা। খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও তার পরিবারের ১৯৯টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে মোট জমা ছিল প্রায় ২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা, যার প্রায় ২ হাজার ৭ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিস্তারিত অনুসন্ধানে দেখা যায়, এনা ট্রান্সপোর্ট প্রা. লি.-এর ৪৩টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে জমা ৯৩৪ কোটি টাকা, উত্তোলন ৯০৭ কোটি টাকা; এনা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.-এর ৮টি হিসাবের জমা ৪১০ কোটি, উত্তোলন ৪০৮ কোটি; এনায়েত উল্লাহর ব্যক্তিগত ৭৪টি হিসাবের জমা ৪৫৯ কোটি, উত্তোলন ৪০৩ কোটি। ‘স্ট্রাকচারিং’ বা ‘স্মার্ট লেয়ারিং’ কৌশল ব্যবহার করে মোট ১০৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং করা হয়েছে।

এই প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD