‘প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট এফোর্ড করতে পারব না’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, দেশের সব অর্গানের মধ্যে যেন ব্যালেন্স থাকে, সেটা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) চেষ্টা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, “আমরা চাই না প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে কোনো রকমের ভারসাম্য নষ্ট হোক। আমরা সেটি এফোর্ড করতে পারব না এই মুহূর্তে। আমরা চাই আপনার সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। একটা ব্যালেন্সড অবস্থা থাকতে হবে।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠকে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা কোনো ঝামেলার মধ্যে যেতে চাই না এবং যেতে পারব না। তা সহ্যও করতে পারব না। পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা এই সুযোগ নেওয়ার জন্য বসে থাকবে।’’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, “জাতিসংঘ সফরের সময় আপনি আখতার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমরা ভেবেছিলাম এতে সবাই আশ্বস্ত হবে। কিন্তু এখন দেখছি বারবার একই আলোচনা পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। আমাদের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, এর বিকল্প নেই।”
বিএনপি নেতা বলেন, দীর্ঘদিন অনির্বাচিত সরকার থাকার ফলে রাষ্ট্রে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, তা এখনো বিদ্যমান। বিলম্ব হলে এ সংকট আরও গভীর হতে পারে। তিনি বলেন, “আমাদের দ্রুত নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, নইলে অতীতে অন্যান্য দেশের মতো অস্থিতিশীলতার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।”
বিজ্ঞাপন
জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, এখন শুধু স্বাক্ষরের অপেক্ষা। কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট থাকাটা স্বাভাবিক। যদি কোনো ভিন্নমত না-ই থাকত, তাহলে এতদিনের আলোচনার প্রয়োজন পড়ত না।”
এ সময় তিনি কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেন, “সব প্রস্তাব বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কৃতির বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে। এটি বাংলাদেশ। এখানে ব্রিটিশ বা আমেরিকান প্রথা একভাবে খাটে না।”
আরও পড়ুন: আমি আয়না ঘরে ছিলাম: আমির হামজা
বিজ্ঞাপন
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য কাজ করছি। তবে আমাদের সমর্থন সীমাহীন নয়, এটি শর্তসাপেক্ষ একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন আয়োজনই সেই শর্ত।”
তিনি সচিবালয়ে নিয়োগ ও বদলির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আপনি মন্ত্রিপরিষদে একটি ক্যাবিনেট কমিটি গঠন করেছেন, কিন্তু সেখানে কোনো প্রচলিত নিয়ম মানা হচ্ছে না। পদোন্নতি ও বদলির নামে সেখানে একধরনের রাজত্ব চলছে।”
বিএনপি নেতা আরও বলেন, “আমাদের অতিরিক্ত বিপ্লবী হওয়া যাবে না, বাস্তবতার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মধ্য দিয়েই জাতীয় সনদ বাস্তবায়িত হতে হবে।”
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি (রব), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।