বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির টানাপোড়েন, বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে নতুন করে ত্রিমুখী টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে সংস্কার-ভিত্তিক ঐক্যের যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল, তা এখন ফাটলের মুখে। সনদ বাস্তবায়নের নানা মতভেদের কারণে তিন দলের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব বাড়ছে।
বিজ্ঞাপন
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, “নোট অব ডিসেন্ট” এবং গণভোটের মতো ইস্যুতে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। এই বিষয়গুলো নিয়েই দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, এরা নতুন দল, তাই তাদের রাজনৈতিক পরিপক্বতা কম। আমরা তাদের প্রতি স্নেহ রাখি, কিন্তু ভুল হয়েছে তাদের মন্ত্রিসভায় নেওয়ায়। তারা বাইরে থাকলে সমর্থন আরও বাড়তো।
বিজ্ঞাপন
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ কিছুটা সতর্ক অবস্থান নিয়ে বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। কিন্তু যদি সনদ কোনো মহলকে সন্তুষ্ট করার জন্য বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়, তার দায় তাদেরকেই নিতে হবে।
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের শেষ সময় ৩১ অক্টোবর, তবে এনসিপি বলছে তারা তিনটি শর্ত পূরণের পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে সনদে সই করবে।
আখতার হোসেন জানান, যদি আলোচনায় আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি হয়, তাহলে আমরা অংশ নেবো। অন্যথায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
বিজ্ঞাপন
বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে জামায়াতের ‘পিআর আন্দোলন’কে “পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা” হিসেবে উল্লেখ করেন। এতে জোটের ভেতর সম্পর্ক আরও টানটান হয়ে ওঠে।
এর জবাবে আখতার হোসেন বলেন, যে আলোচনাগুলো বাস্তবসম্মত ছিল না, সেগুলোকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ফলে সংস্কারের মূল আলোচনা গুরুত্ব হারিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ পাল্টা মন্তব্যে বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে পিআর ব্যবস্থা চেয়েছি যাতে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। এখন যারা বলছেন এটি দলীয় এজেন্ডা, তারা নিজেরাই পিআরের বিপক্ষে যাচ্ছেন।
বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনও মন্তব্য করেন, নতুন দলগুলো ধীরে ধীরে রাজনীতিতে পরিপক্ব হবে। জনগণ এসব বিষয় নিয়ে বেশি ভাবিত নয়।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে যে মতভেদ তৈরি হয়েছে, তা নতুন ঐক্যের প্রচেষ্টাকে কঠিন করে তুলবে। গণঅভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সব দলের দরকার হবে সহনশীলতা ও পারস্পরিক ছাড়ের মনোভাব।








