দিল্লিকেন্দ্রিক আধিপত্য রুখে দেওয়ার হুঁশিয়ারি হাসনাতের

ঢাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে দিল্লিকেন্দ্রিক আধিপত্য আর মেনে নেওয়া হবে না। বিদেশি প্রভাব বিস্তারের যেকোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাবেশ ও গণ-প্রতিরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ওসমান হাদির ওপর চালানো গুলি কেবল একজন ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নয়, বরং তা পুরো জাতির বিবেককে আঘাত করেছে।
তার মতে, দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে যারা সক্রিয় ছিল, তারা এখন নতুন পরিচয়ে—টকশোর বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী কিংবা নাট্যকর্মীর ছদ্মবেশে—আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে।
বিজ্ঞাপন
ওসমান হাদির জন্য দোয়া চাওয়ার মধ্যেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়—এমন মানসিকতাকে ব্যর্থতা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, হাদি দেশকে ন্যায় ও ইনসাফের পথে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে আদর্শচ্যুত হয়ে পড়েছে। তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোপন সমঝোতা ও সুবিধাভোগিতার রাজনীতি আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে।
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী কিংবা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর মাধ্যমে দিল্লির আধিপত্য বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদীদের কোনো স্থান নেই—তারা যে নাম বা পরিচয়েই আবির্ভূত হোক না কেন।
তিনি দাবি করেন, গুলশানকেন্দ্রিকভাবে জাতীয় পার্টির নামে যারা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, ওসমান হাদির রক্তের সময় তাদের বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জায়গাও দেওয়া হবে না।
সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও একটি জায়গায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তার মতে, রাজনৈতিক দলগুলো স্বার্থপরতার কারণে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপসের রাজনীতি দেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ ও ভারতকে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারা সীমান্তের ওপার থেকে বা বিদেশি যোগাযোগের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়—তা জনগণ জানে। বাংলাদেশের ক্ষমতা নির্ধারণ হবে দেশের মানুষের ভোটে, কোনো বিদেশি রাজধানীতে নয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এই হামলা শুধু ওসমান হাদির ওপর নয়, এটি জুলাই বিপ্লব, দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকারকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হতে দেওয়া হবে না।








