সবজিতে ভয়াবহ মাত্রায় কীটনাশক, সহনীয় সীমার চেয়ে ২০০ গুণ বেশি!

বাংলাদেশে সবজি উৎপাদনে গত এক দশকে বৈপ্লবিক অগ্রগতি হলেও নিরাপদ খাদ্যের দিক থেকে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলন জানিয়েছেন, দেশের কিছু সবজিতে আন্তর্জাতিক মানের সহনীয় সীমার চেয়ে প্রায় ২০০ গুণ বেশি কীটনাশক অবশিষ্টাংশ (রেসিডিউ) পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে দেয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, আগে এক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল একটি সবজিতে সহনীয় সীমার চেয়ে ৭০ গুণ বেশি কীটনাশক আছে।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য একটি সবজিতে এ মাত্রা ২০০ গুণ ছাড়িয়েছে। তার ভাষায়, “আসল সংখ্যা ছিল ২০০-এরও অনেক বেশি, কিন্তু মানুষ আতঙ্কে হার্টফেল করতে পারে ভেবে কম বলা হয়েছে।”
বিজ্ঞাপন
তিনি সতর্ক করে বলেন, কীটনাশক স্প্রে করার পরপরই যদি ক্ষেত থেকে শাকসবজি সংগ্রহ করে বাজারে আসে, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়। এখন পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির কারণে সাভার বা গাজীপুরের সবজি মাত্র ৮ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছে যায়। ফলে ভোক্তাদের পাতে পৌঁছানো এসব খাদ্যে কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি নেই। এর সঙ্গে শাকসবজি ও ফসলে থাকা হেভি মেটালও মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মাহবুব কবীর আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে বর্তমান প্রজন্মের পাশাপাশি গর্ভবতী মা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরও ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এ দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাই প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত। দায়িত্ব দিলে মাত্র এক বছরের মধ্যে বড় পরিবর্তন সম্ভব।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে সবজি উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার টন, যা পাঁচ বছর আগের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি। বর্তমানে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থানে আছে। তালিকার শীর্ষে চীন ও দ্বিতীয় স্থানে ভারত।