বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিনের সম্পদের পাহাড়

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজার ও জলযান সংগ্রহ এবং অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেযেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ড্রেজার ও জলযান সংগ্রহ এবং অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ডিপিডিসি’র এমডি নিয়োগে প্রতারণা
জানা যায়, ৩৫টি ড্রেজার, ১৬১টি জলযান, তিনটি ড্রেজার বেইজ এবং নারায়ণগঞ্জে একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণের জন্য বিশাল এই প্রকল্প হাতে নেয় বিআইডব্লিউটিএ। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। যা পরে সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে ২০২৭ সালে শেষ হবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে রাজধানীর রামপুরা মৌলভীরটেকে ২৭/এ/১ ঠিকানায় প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যযে পাঁচতলা বাড়ি, খিলগাঁও রিয়াজবাগে ফ্ল্যাট এবং টাঙ্গাইলের গ্রামে কোটি কোটি টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য উঠে এসেছে। তার চাকরি জীবনের বৈধ আয় দিয়ে এ ধরনের সম্পদ অর্জন সম্ভব নয় বলে অভিযোগ করেছে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াতকে অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে দুদক।
বিজ্ঞাপন
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আব্দুল মতিন, তার স্ত্রী শাহানা আক্তার জলি ও দুই সন্তানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজে দেশের ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান, রাজউক, সিটি করপোরেশন, এনবিআর ও ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়েছেন। জানা যায়, প্রকৌশলী মতিন ও তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ যাচাই করছে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সততা খুঁজে পেয়েছে সংস্থাটি।
অভিযোগ রযেছে, আব্দুল মতিনের ক্ষমতার পেছনে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ'র একজন প্রধান প্রকৌশলী ও একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। তাদের ছত্রছায়ায় প্রকল্পের ড্রেজিং কাজ কাগজে-কলমে দেখানো হলেও মাঠপর্যায়ে অনেক কাজই হয়নি। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ'র তালিকাভুক্ত ঠিকাদার জে এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু জাফর এবং তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও এ অনিয়মে বিনিযোগ করেছে।
আরও পড়ুন: ডিপিডিসি’র এমডি নিয়োগে যোগ্যতা উপেক্ষা
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও রাজধানীর রামপুরায় ডিএলআই বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি আবাসন কোম্পানি খুলে শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বিআইডব্লিউটিএর প্রায় ২০ জন প্রকৌশলী। দুদক জানায়, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন চলতি মাসে অবসরে যাবেন বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ'র ডেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি এমনকি তার ব্যবহিত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেনও কোন সারা মেলেনি।