Logo

কক্সবাজারে ফিরছে পুলিশ স্বাভাবিক হচ্ছে সেবা

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১০ আগস্ট, ২০২৪, ০৪:৩৮
75Shares
কক্সবাজারে ফিরছে পুলিশ স্বাভাবিক হচ্ছে সেবা
ছবি: সংগৃহীত

ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাড়ি, মালামাল উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা ফেরত এনেছেন

বিজ্ঞাপন

ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের অন্যান্য এলাকার মতো কক্সবাজারের দুইটি থানায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি মালামাল লুট করা হয়েছিল। এর জের ধরে কক্সবাজার জেলার ৯ উপজেলার সকল থানা, পুলিশ ফাঁড়ি এবং তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ শূন্যতা তৈরি হয়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মো. ময়নুল ইসলাম আহবানে টানা ৪ দিন পর থানায় ফিরতে শুরু করেছে পুলিশের কর্মকর্তা সহ অন্যান্য সদস্যরা। এসব থানায় আনসার সদস্যের পাশাপাশি নিরাপত্তা দিতে শুরু করেছে সেনা সদস্যরাও।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সেনা সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তা প্রদান এবং পরিদর্শনে এসে সেনা বাহিনীর লে. কর্ণেল তানভীর হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের সকল থানা কার্যক্রম এখন থেকে স্বাভাবিক। জনগনের সকল সেবা প্রদানের জন্য থানার পুলিশ কাজ শুরু করেছে। প্রতিটি থানায় আগে থেকে নিরাপত্তায় আনসার সদস্য রয়েছে। এখন সেনা সদস্যরা নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের সদস্যরা থানায় ফিরে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের উত্তরে গণমাধ্যমকে লে. কর্ণেল তানভীর বলেন, কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি সম্পদ। এই  জেলা সুমদ্র ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে পর্যটক ভ্রমণে আসেন। এখন থেকে পর্যটকরা এখানে ভ্রমণে নিরাপদ। পর্যটক ও পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

বিজ্ঞাপন

৫ আগস্ট হামলায় কক্সবাজার সদর থানা প্রাঙ্গনে থাকা জব্দ করা দেড় শতাধিক মোটর সাইকেল, থানার চেয়ার, টেলিব, কম্পিউটার, টিভি, গাড়ি সহ যা ছিল তার আর কিছু নেই। আগুনে পুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে মামলার সকল নথিপত্রও। থানার মালখানা জব্দ করে সকল আলামতও লুট হয়েছে। সদর থানার সামনে থাকা ট্রাফিক অফিসেও একই পরিস্থিতি। ট্রাফিক অফিস আগুনে পুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এসব মালামালের বিষয়ে তানভীন বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাড়ি, মালামাল উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা ফেরত এনেছেন। এটা শতভাগ শিক্ষার্থীদের অধিনে হচ্ছে। এরা লুট করা মালামাল উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে জমা দিচ্ছে। এবং সেসব মালামাল সেনাবাহিনী পুলিশকে হস্তান্তর করছে। শিক্ষার্থীদের আহ্বানে অনেকেই লুট করা মালামাল ফেরতও দিচ্ছে। তিনি এসব মালামাল ফেরত দেয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় তিনি থানায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপও করেন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কক্সবাজার সদর থানা ও ঈদগাঁও থানায় আগুন দেয়া এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। অপর থানায় সমুহে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। শুক্রবার পর্যন্ত কিছু সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য যোগদান করেছেন। অন্যান্যরাও ফিরতে শুরু করেছে।

যোগদান করা দুই পুলিশ সদস্য জানান, তাদের এখনও ভয় কাটছে না। আসার পথে কেউ হামলা করে কিনা সে ভয়ও তাড়া করেছে। এ জন্য সিভিল পোশাকে অফিসে আসতে হলো। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনও ভাবতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

পুলিশ লাইনের প্রধান ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য জানান, কিছু কিছু কর্মকর্তা বর্তমানে অফিসে অবস্থান করছেন। বেশিরভাগ এখনও আসেননি। তাঁদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। 

থানায় দায়িত্বরত আনসার বাহিনীর ইনচার্জ সাইদুর রহমান বলেন, বুধবার দুপুর থেকে দায়িত্ব পালন করছি। থানার পুলিশ সদস্যরা এসে আবার চলে যায়। কারণ ভিতরে বসার মত পরিস্থিতি নেই। এখনো সবকিছু অগোছালো। 

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, আইজিপি মহোদয় সকলকে কাজে যোগদান করতে বলেছেন। যোগদান করেছেন। কিন্তু ভিতরে যাওয়ার মত পরিস্থিতি নেই। সবকিছু এখনো এলোমেলো। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, চেয়ার, টেবিল সবকিছু ভাঙ্গাচোরা। এজন্য থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের অনেকে যোগ দিতে পারছেনা।

তিনি বলেন, কার্যালয়ে আপাতত পুলিশ সদস্য ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সবাইকে পরিচয় নিশ্চিত করে প্রবেশ করতে হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নাম জানাতে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন উপপরিদর্শক (এসআই)  জানায়, সরকারি কোয়ার্টারের থাকা ১১ টি পরিবারের সবকিছু ভেঙে তচনছ করে ফেলেছে। এমনকি ব্যবহারের লুঙ্গিটা পর্যন্ত বাদ যায়নি।

জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, কক্সবাজার জেলায় থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তারমধ্যে অনেকে ছুটিতে আছেন। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পরে বিক্ষুব্ধ জনতা জেলার বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ বক্সে একযোগে হামলা ও লুটপাট চালায়। এই সময় আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন পুলিশ সদস্য।

 

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ ইসলাম জানিয়েছেন,  থানায় এবং দপ্তরে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা তার নিজ নিজ কর্মে যোগ দিয়েছেন। যেসব থানাগুলোতে হামলার ঘটনা ঘটেছে এসকল থানায় সবকিছু ঠিক করার চেষ্টা চলছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আমরা ফাইনালী রিপোর্ট তৈরি করিনি। এজন্য এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। 

 

কক্সবাজার আনসার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ড. লৎফুর রহমান জানান, সরকারের নির্দেশনায় কক্সবাজারে থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রক্ষায় কাজ শুরু করেছে আনসার বাহিনীও। দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশেরও। পাশাপাশি সেনা বাহিনীও রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চালাবে বলেও জানান তিনি।

এসডি/ 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD