Logo

ঈশ্বরদীতে শীতের আমেজে ঘরে ঘরে ‘কুমড়ো বড়ি’ তৈরির হিড়িক

profile picture
উপজেলা প্রতিনিধি
পাবনা
২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০১
10Shares
ঈশ্বরদীতে শীতের আমেজে ঘরে ঘরে ‘কুমড়ো বড়ি’ তৈরির হিড়িক
ছবি: প্রতিনিধি

কুমড়ো বড়ি উত্তর জনপদের পাবনা ঈশ্বরদীর একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। প্রতি বছর শীতের মৌসুম এলেই উপজেলার প্রতিটি গ্রামের নারীরা খাবারে বাড়তি স্বাদ আনতে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন।

বিজ্ঞাপন

কুমড়ো বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময় শীতকাল। শীতের সময় গ্রামের নারীদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তারপরও নিত্যদিনের ছোট কাজও বেশি থাকে। এর মধ্যেই সব কাজের আগে সকাল বেলা কুমড়া বড়ি তৈরি করেন নারীরা। কুমড়া বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক খাদ্য। এতে তরকারির স্বাদে যোগ হয় নতুন মাত্রা।

সরেজমিনে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, উপজেলার শত শত নারী কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে জড়িত রয়েছে। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কুমড়ো বড়ি তৈরির ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের মাঝে।

বিজ্ঞাপন

বর্ষাকাল বাদে বাঁকি মাসগুলোতে কম বেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি করা হয়। আশ্বিন মাস থেকে ফ্লাগুন এই ৬ মাস কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়। শীতকাল কুমড়ো বড়ি তৈরির ভরা মৌসুম। এ সময় গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে কমবেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি করা হয়।

পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাঁকিটা বাজারে বিক্রি করেন। শীতের সময় কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকে বেশি আর গ্রামের নারীরা বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন। কুমড়ো বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকলাইয়ের ডাল আর চালকুমড়া। এর সঙ্গে সামান্য মসলা।

প্রথমে মাসকলাই রৌদ্রে শুকিয়ে যাতায় ভেঙে পরিস্কার করে বা না ভেঙে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা মাসকলাই পানিতে ভেজাতে হয়। তারপর ঢেঁকি বা শিল-পাটা পিষে নিয়ে কুমড়ো বড়ির মিশ্রণ তৈরি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়ো বড়ি তৈরির মেশিন স্থাপনের পর থেকে সবাই মেশিনে মাড়াই করে মাসকলাই ও কুমড়ার মিহি করা হচ্ছে। এরপর দুইটির মিশ্রণে কুমড়ো বড়ির উপকরণ তৈরি করা হয়। রৌদ্রউজ্জ্বল ফাঁকা স্থান, বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ বা খোলা জায়গায় ভোর থেকে বড়ি তৈরি করা শুরু হয়। পাতলা কাপড়ে সারি সারি বড়ি বসানো হয়।

কুমড়ো বড়ি বসানোর পর দুই-তিন দিন একটানা রৌদ্রে শুকানো হয়। সূর্যের আলো কম হলে ৪-৫ দিন পর্যন্ত শুকাতে সময় লেগে যায়। শুকানোর পর কাপড় থেকে বড়ি উঠিয়ে পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঈশ্বরদী উপজেলার শিমুলতালা মুদি ব্যবসায়ী রাজধানী স্টোরের পরিচালক বলেন, এখানকার কুমড়ো বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় ঈশ্বরদীসহ সারা দেশেই এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মো: আব্দুল হামিদ বলেন, শীতকালে আমাদের ঈশ্বরদীতে গ্রাম বাংলায় প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায়, যা এখানকার গ্রামাঞ্চলের একটি পরিচিত দৃশ্য। এই সময়ে নারীরা দলবদ্ধভাবে কুমড়া ও মাসকলাই দিয়ে সুস্বাদু বড়ি তৈরি করেন, যা মাছ ও সবজির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। আগেকার দিনে এটি একটি কষ্টসাধ্য কাজ হলেও, এখন মেশিনের ব্যবহার থাকাতে বড়ি তৈরির প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন শীতকালে কুমড়া বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময়। কারণ শীতের সময় শীতকালীন সবজির সঙ্গে কুমড়া বড়ি স্বাদ অতুলনীয়।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD