Logo

কুলাউড়ায় আমনের বাম্পার ফলন

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার
১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:১৭
5Shares
কুলাউড়ায় আমনের বাম্পার ফলন
ছবি: প্রতিনিধি

চায়ের জনপদ কুলাউড়া এবার যেন নিজেকে নতুন এক পরিচয়ে হাজির করেছে—চা–বাগানের সবুজ ঢেউকে ছাড়িয়ে এখন আমন ধানের মাঠ সোনালি সমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজার জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ উপজেলার কৃষকরা এ মৌসুমে পেয়েছেন আমনের নজিরবিহীন ফলন। মাঠে দুলছে সোনালি শীষ, চাষির মুখে ফুটেছে পরিতৃপ্তির হাসি তবু মনে লুকিয়ে আছে দামের শঙ্কা।

কুলাউড়ায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠজুড়ে সোনালি শীষের প্রাচুর্যে কৃষকদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে এ মৌসুমে মোট ১৯,৩৫৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল হেক্টরপ্রতি ৫ টন এবং চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩.৪ টন। এ বছর চাষিরা ৪৯, ৮৭, ১০৩, স্বর্ণা–৫, ৯০ এবং সুগন্ধি চিনিগুঁড়া জাতের ধান চাষ করেছেন।

উঁচু জমিতে চাষাবাদের কারণে এবং থেমে থেমে বৃষ্টির সহায়তায় অধিকাংশ জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই ধান কাটার কাজ শুরু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ শতাংশ জমির ধান ঘরে তোলা হয়েছে।

বাকি জমিগুলোর ধান মাঠে দুলছে বাতাসে। কৃষকেরা জানান, গত বছর প্রতি বিঘায় ১৪–১৬ মণ ধান পেলেও এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ১৮–২০ মণ। প্রথমদিকে পোকার আক্রমণ থাকলেও সঠিক পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

তবে বাজারদর নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তায় রয়েছেন কৃষকেরা। তারা বলেন, ধানের দাম ভালো থাকলে এ মৌসুমে লাভবান হবেন; অন্যথায় উৎপাদনের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে। ধান কাটার মৌসুমে দিনমজুরেরাও ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে খুশি।

বেশ কিছু কৃষক অভিযোগ করেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত আসেন না। সরকারি বীজ বা অনুদান সময়মতো পৌঁছায় না বলেও অভিযোগ তাদের।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জসিম উদ্দিন বলেন, এ মৌসুমে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে উৎপাদন বেড়েছে। মোটা জাতের চেয়ে চিকন জাতের ধানের ফলন বেশি হওয়ায় মোট উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। জনবল সংকটের কারণে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কম থাকলেও মিটিং, প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে কুলাউড়া উপজেলায় সরকার এ মৌসুমে ১৬৫ মেট্রিক টন আমন ধান কিনবে। ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি মণ ১৩৬০ টাকা। এপ্সের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা কৃষকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী নির্ধারণ করে তাদের কাছ থেকেই ধান সংগ্রহ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন সকল কৃষককে দ্রুত অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

চায়ের সুবাসে ঘেরা কুলাউড়ায় এবারের আমন মৌসুম যেন উৎপাদনের উৎসব হয়ে এসেছে। মাঠের সোনালি ঢেউ দেখে কৃষকের মন ভরে উঠছে আশায়।

তবে সব আনন্দের মাঝেও বড় প্রশ্ন—বাজারদর কি কৃষকের ঘরে প্রকৃত সুখ ফিরিয়ে আনবে? সরকারি ধান ক্রয় কার্যক্রম, অ্যাপস রেজিস্ট্রেশন ও লটারির পদ্ধতি এ অনিশ্চয়তার কিছুটা হলেও প্রশমিত করছে।

বিজ্ঞাপন

এখন দেখার পালা—কুলাউড়ার সোনালি ফসল কি কৃষকের ঘরে সত্যিকার স্বর্ণসম পাথেয় হয়ে উঠবে, নাকি বাজারদরের ওঠানামায় আবারও শঙ্কার মেঘ জমবে?

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD