চুয়াডাঙ্গা পেল মানবিক ও জনবান্ধব পুলিশ সুপার

চুয়াডাঙ্গায় যোগ দিলেন নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। সাতক্ষীরায় দায়িত্ব পালনকালে মানবিকতা, দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে যিনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন— সেই সুপারই এখন দায়িত্ব নিলেন সীমান্তবর্তী এই জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নেতৃত্বে। গত ২৯ নভেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
বিজ্ঞাপন
গত ৩০ নভেম্বর (রবিবার) সকাল সাড়ে ৯টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে চৌকস ফোর্স ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। পরে তিনি পুলিশ অফিস ও পুলিশ লাইন্সের বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা ও জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করতে সকলকে অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ নিষ্ঠায় পালনের নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের শুরুতে সাতক্ষীরায় দায়িত্ব নেওয়ার পর রাতভর মহড়া, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান, চাঞ্চল্যকর মামলা উদ্ঘাটন, ওয়ারেন্ট তামিলে গতি, দলীয় সদস্যদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণসহ বহুমুখী উদ্যোগ নিয়ে জেলার আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় যুবককে গলা কেটে হত্যা
বিজ্ঞাপন
তার উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে— মহাসড়ক, শহর ও গ্রামীণ সড়কে ডাকাতি ও অপরাধ দমনে নিয়মিত টহল পরিচালনা করে তিনি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনেন। তার উপস্থিতি মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদেরও মনোবল বাড়ায়। তার নির্দেশনায় বড় মাদক চক্র শনাক্ত, গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গোয়েন্দা সমন্বয় ও দক্ষ অপারেশনের মাধ্যমে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সফলতা পান। বাসস্থান, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, মানসিক স্বাস্থ্য, সেফটি— প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত যত্নশীল। পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে একাধিক পদক্ষেপ নেন। থানা থেকে তদন্তকেন্দ্র— যেকোনো সময়ে পরিদর্শন করে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়েছেন। মাসিক সভায় প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান ও বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে পুরস্কৃত করতেন, যাতে ফোর্স আরও অনুপ্রাণিত থাকে। ছদ্মবেশে জনগণের সমস্যা শোনা, রাতে মাঠে টহল, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো— এসব কর্মকাণ্ড তাকে ‘মানবিক পুলিশ সুপার’ হিসেবে পরিচিত করে তোলে।
এছাড়াও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সচেতনতা, ট্রাফিক নির্দেশনা, অপরাধ দমন বার্তা প্রচারে আধুনিক তথ্য–সেতু তৈরি করেন তিনি। নিয়মিত আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ, শরীরচর্চা, ড্রিল, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, খেলাধুলা— সবকিছুর আয়োজন করেন নিজ উদ্যোগে। পুলিশ লাইন্স মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। জেলার শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন।
বিজ্ঞাপন
মানবিকতা, সততা ও শৃঙ্খলার অনন্য সমন্বয়ে কাজ করে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেন তিনি। সাতক্ষীরার মানুষ আজও তাকে একজন নির্লোভ, দায়িত্বশীল ও জনবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে মনে রাখে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার প্রথম অঙ্গীকার। চুয়াডাঙ্গার মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করব।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় নতুন এসপি হিসেবে তার যোগদানকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন স্থানীয়রা। জেলার মানুষ আশা করছে— মাদক দমন আরও শক্তিশালী হবে; ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে; আইনশৃঙ্খলা হবে আরও স্থিতিশীল এবং পুলিশ–জনগণ সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় তার মানবিক ও শক্তিশালী নেতৃত্ব নতুন এক অধ্যায় রচনা করবে— এমন বিশ্বাস করছে জেলাবাসী।








