মাসজুড়ে টিকাবঞ্চিত সন্দ্বীপের হাজারো শিশু

ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে নবজাতকসহ শিশুদের ১০টি মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
টানা এক মাস ধরে কর্মসূচি স্থবির থাকায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় হাজারো শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উচ্চতর বেতন স্কেলের দাবিতে সারা দেশের মতো চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর থেকে স্বাস্থ্য সহকারীরা কর্মবিরতিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলায় মাঠপর্যায়ে ইপিআই কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: পুকুরে ধরা পড়ল ৮ কেজির কাকিলা মাছ
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, পোলিও, হুপিং কাশি, যক্ষ্মা, ধনুষ্টংকার, হাম, ডিপথেরিয়া ও রুবেলাসহ ১০টি মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে জন্মের পর থেকে ১৮ মাস বয়স পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে মোট ১১টি টিকা দেওয়া হয়। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব টিকা বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। ইপিআই কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা মাঠপর্যায়ে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন।
প্রতিটি ইউনিয়নে ২৪টি করে টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে। প্রতি মাসে সন্দ্বীপ উপজেলায় গড়ে ৭২০ জন শিশুর জন্ম হয়। জন্মের পরপরই শিশুদের টিকা কার্ড দেওয়া হয়, যেখানে টিকা গ্রহণের সময়সূচি উল্লেখ থাকে। নির্ধারিত সময়ে টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক। টিকা কার্ড ছাড়া জন্মনিবন্ধন সনদও মেলে না। ফলে টিকাদান বন্ধ থাকায় জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইপিআই কার্যক্রমের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ একাধিকবার আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নকারীরা ‘ভ্যাকসিন হিরো’ হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। তবে সেই পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মসূচিই এখন কর্মবিরতির কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে ভবিষ্যতে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সন্দ্বীপ উপজেলার সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘একই যোগ্যতার উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তারা ১৮তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। অথচ আমরা এখনো ১৮তম গ্রেডেই রয়েছি। আমাদের পরিশ্রমে দেশ আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেও আমরা বঞ্চিত। আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহ থেকে টিকাদান কার্যক্রমে ফিরে যাব।’
বিজ্ঞাপন
সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মানস বিশ্বাস বলেন, ‘স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতির কারণে সারা দেশে এক মাস ধরে ইপিআই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে শিশুরা ১০টি রোগের ১১টি ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে মাঠপর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করছি।’
জনগুরুত্বপূর্ণ এ টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত সচল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ও সচেতন।








