শেখ হাসিনাসহ ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ

জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের বাকি দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম ও শাইখ মাহদীসহ অন্যান্যরা।
এদিন সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে গ্রেপ্তার তিন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
বিজ্ঞাপন
পলাতক ১০ আসামির মধ্যে পাঁচজন ছিলেন ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা। এদের মধ্যে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী এবং মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।
বাকি আসামিরা হলেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক।
বিজ্ঞাপন
এ মামলায় পাঁচটি অভিযোগ দায়ের করেছে প্রসিকিউশন। ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানি চলাকালীন চিফ প্রসিকিউটর জেআইসি সেলে সরকারবিরোধী ব্যক্তিদের গুম রেখে নির্যাতন করার ভয়াবহ কাহিনী উন্মোচন করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ২৬ জনের ঘটনা বিশদভাবে তদন্তের মাধ্যমে সামনে এসেছে।
শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করেন। এর আগে, ৮ অক্টোবর মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
বিজ্ঞাপন
৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার আইনজীবী পরিবর্তন হয়ে মো. আমির হোসেনকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। মামলার ধার্য তারিখে কোনো আদেশ না দেয়ায় আজকে অভিযোগ গঠন ও বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলার পরবর্তী শুনানিতে অভিযোগ গঠনের পর আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম দ্রুত চালানো হবে বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানা গেছে।








