অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার যৌক্তিকতা মাঠে প্রমাণ করা তামিমের দায়িত্ব: মাশরাফি
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:১২ পূর্বাহ্ন, ৮ই জুলাই ২০২৩
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশনা পাওয়াসহ বৈঠকের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি।
মাশরাফি বিন মুর্তজার স্থানটি পান তামিম ইকবাল। মাশরাফি ওয়ানডে অধিনায়কত্ব দেওয়ার পর নেতৃত্ব পান তামিম। দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া দারুণ, সম্পর্কটাও মধুর। এ কারণেই কিনা তামিমের আচমকা ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত বদলাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাধ্যম হিসেবে মাশরাফিকে বেছে নেন। তামিমকে নিয়ে গণভবনে গিয়েছিলেন মাশরাফি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তামিম সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন, মাস খানেকের বিশ্রামের পর আবারও ফিরবেন লাল সবুজের জার্সি গায়ে।
মাশরাফিকে তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে গণভবনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন ধরে দলে বড় ভাই, অভিভাবক হিসেবে পাওয়া মাশরাফির ডাকে সাড়া দিয়ে তামিম যান দেশপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে। প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনার পর অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন তিনি। সঙ্কটে অনেক বড় দায়িত্ব পালন করা মাশরাফি তাকিয়ে তামিমের দিকে।
মাশরাফি মনে করেন, “ফিট হয়ে ফিরে অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার যৌক্তিকতা মাঠে প্রমাণ করা এখন তামিমের দায়িত্ব। তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশনা পাওয়াসহ বৈঠকের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি।”
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি জানান, তিনি চেয়েছেন তামিম গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মনের কথা জানাক। মাশরাফি বলেন, “তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশনা দেন। আমি উনাকে বলেছি, ‘তামিমকে আমি নিয়ে আসছি আপনার কাছে।’ আমার দায়িত্ব ছিল ওকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া। চেয়েছি যে, ও গিয়ে মনের কথা বলুক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে কথা আছে, সেটা তিনি বলবেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত হওয়ার, হবে।”
আরও পড়ুন: আমাদের অধিনায়ক যদি না থাকে তাহলে খেলবো কীভাবে: পাপন
মাশরাফি জানান, এরচেয়ে ভালো সমাধান তিনি আশা করেননি। তার ভাষায়, “আমি নিজে এখানে কী চাই, সেটা ভিন্ন জিনিস।। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তিনি কথা বলবেন, দিক নির্দেশনা দেবেন, সবকিছু করবেন। আমার ভূমিকা কেবল নিয়ে যাওয়া। এর চেয়ে ভালো সমাধান আমি আশা করিনি। বিরতি চেয়েছে, সেটা নিক। পুরো ফিট হয়ে, মানসিকভাবে তরতাজা হয়ে ফিরুক। কিন্তু এভাবে অবসরের মানে নেই।”
প্রধানমন্ত্রীর সামনে তামিমকে দেওয়া নির্দেশনা নিয়ে মাশরাফি বলেন, “আমার কথা হলো, সে যেন ট্রেনিং করে পুরো ফিট হয়ে আসে। দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ওর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ওকে বলেছি, "আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করেছিস, তোর ক্যারেকটারে সেই দাপট থাকা উচিত। এতো আমতা আমতা করে, এতো সংশয় নিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে না। ক্রিকেটে অভিমানের কোনো মূল্য নেই। এভাবে অবসর নিলে তিন মাস পর তোকে কেউ মনে রাখবে না। করার মতা কিছু করতে হবে।”
আরও পড়ুন: দেড় মাসের ছুটিতে তামিম, ফিরবেন এশিয়া কাপে অধিনায়ক হিসেবে
“এটাও বলেছি ওকে, 'তুই বাংলাদেশের জন্য খেলছিস, এতে তোর গর্ব অনুভব করা উচিত। বাংলাদেশ তোর প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, তোর চিরকৃতজ্ঞ থাকা উচিত দলের প্রতি। ১৫ হাহজার রান করে যদি দলের ভেতরে-বাইরের চাপ নেওয়ার মানসিকতা না থাকে, তাহলে অবসর নেওয়াই ঠিক আছে।" এখন এসব কথায় ওর খারাপ লাগতে পারে, তবে ক্রিকেট খেলা এতটা সহজ নয়। তামিম অবশ্য ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে।” যোগ করেন মাশরাফি।
নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা থেকে তামিমকে বুঝিয়েছেন মাশরাফি। মাশরাফির মতে, “দলে এমন অনেক কিছুই হয়। সেসব মানিয়ে নিয়েই খেলতে হয়, 'বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক কিছুই হয়। কোচের সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে, বোর্ডের সঙ্গে হতে পারে। আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ার আর অধিনায়কত্বের ৫-৬ বছরে তো কম হয়নি এসব। সব দলেই কম-বেশি এসব হয়।”
জেবি/এসবি