বিশ্বে প্রথমবার নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, ২৬শে জানুয়ারী ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে এক নারীকে হত্যাকারী কেনেথ ইউজেন স্মিথের মৃত্যুদণ্ড নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে কার্যকর হয়েছে। বিশ্বে এবারই প্রথম সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরে এমন পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলো।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২৫ মিনিটে কেনেথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। খবর বিবিসির।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
অর্থের বিনিময়ে ১৯৮৯ সালে এলিজাবেথ সেনেত নামে এক প্রচারকের স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় কেনেথের মৃত্যুদণ্ড হয়। তবে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ হলে এর বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল কোর্টে একবার এবং সুপ্রিম কোর্টে দুবার আবেদন করেন ৫৮ বছরের কেনেথ।
শাস্তি কার্যকরের পদ্ধতিটি ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘অস্বাভাবিক’ উল্লেখ করে তিনি এর থেকে রেহাই চান। কিন্তু আদালত তার আবেদন নাকচ করে নাইট্রোজেন গ্যাসে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরই বহাল রাখেন।
যদিও ২০২২ সালে কেনেথের শরীরে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেটা ব্যর্থ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টারের তথ্য মতে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, সারা বিশ্বেও কেনেথই প্রথম ব্যক্তি, যার মৃত্যুদণ্ড নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে কার্যকর হয়েছে।
আলাবামার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আরও দুটি অঙ্গরাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন আছে। এর কারণ হিসেবে রাজ্যগুলি কর্তারা বলছেন, প্রাণঘাতী ইনজেকশন পাওয়া অনেক সময় দুষ্কর হয়ে যায়, অনেক সময় সেটা অকার্যকরও হতে পারে, যেটা কেনেথের ক্ষেত্রে হয়েছে।
দণ্ড কার্যকরের মুহূর্ত
বিবিসি জানায়, কেনেথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর প্রত্যক্ষ করতে গণমাধ্যমের পাঁচজন প্রতিনিধিকে রাজ্যের হলম্যান সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় তদন্ত ও আদালতের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
কেনেথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে তার মুখে বিশেষভাবে তৈরি একটি মাস্ক পরানো হয়। এ মাস্কের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন চলাচলের সুযোগ ছিল না। মাস্কটির সঙ্গে নাইট্রোজেনভর্তি একটি সিলিন্ডারের সংযোগ ছিল।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই মাস্ক পরানোর পর সেখানে গ্যাস ঢুকতে থাকলে কেনেথকে হাসতে দেখা যায়। সেসময় তিনি পরিবারের স্বজনদের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘আমি তোমাদের ভালোবাসি’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই থেকে চার মিনিট কেনেথের শরীর মোচড়াতে থাকে। পাঁচ মিনিটের মতো তিনি ভারী শ্বাস নিতে থাকেন। এরপর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
চিকিৎসকদের মতে, অক্সিজেন ছাড়া নাইট্রোজেনে শ্বাস নিলে দেহকোষগুলো ছিঁড়ে যায়, যাতে মানুষের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: হুতিদের হামলার ভয়ে পিছু হঠল মার্কিন সামরিক জাহাজ
এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর আলাবামার গভর্নর কাই আইভি একটি বিবৃতি দেন। তিনি এতে উল্লেখ করেন, শাসন ব্যবস্থার ৩০ বছরের চেষ্টায় কেনেথ তার ভয়ঙ্কর অপরাধের জবাব পেয়েছেন। আমি প্রার্থনা করি, এতগুলো বছর বেদনা বয়ে বেড়ানো এলিজাবেথের পরিবার যেন এবার একটু স্বস্তিবোধ করতে পারেন।
জেবি/এজে