ময়মনসিংহে বিআরটিসি বাস বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:১৬ অপরাহ্ন, ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৪


ময়মনসিংহে বিআরটিসি বাস বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
ছবি: জনবাণী

ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কে বিআরটিসি বাস বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিক ও চালকরা। এতে তিন ঘন্টা ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাট ভৈরব সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে, প্রশাসনের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে আসেন চালক ও শ্রমিকরা।


বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পরে নগরীর পাটগুদাম ব্রীজমোড় এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এই সড়ক অবরোধ করে। এতে শত শত শ্রমিক অংশ নেয়।


আরও পড়ুন: নাগরিকের জীবনমান উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি: মেয়র টিটু  


এদিকে, সড়ক অবরোধের কারণে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে ওইসব সড়কে চলাচল করা শত শত যাত্রী। এসময় পাটগুদাম সংশ্লিষ্ট সড়ক গুলোতে চলাচল করা যানবাহন আটকা পড়ে ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়।  


কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়ক অবরোধের ঘটনায় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে কাজ করছে। তারা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সামাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে।


তিনি আরও জানান, সড়ক অবরোধের কারণে সাধারন যাত্রীদের চলাচলে কিছুটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি সড়ক পরিস্থিতি দ্রুত সামাধান হবে।


এবিষয়ে বিআরটিসি ময়মনসিংহ বাস ডিপোর ম্যানেজার (অপরারেশন) মো. জাফর আহমেদ বলেন, ২০১৮ সালে ময়মনসিংহে ৪৭টি বিআরটিসি বাস চালু করে সরকার। কিন্তু করোনার কারণে যাত্রী কমে যাওয়ায় তখন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছু বাস ময়মনসিংহ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে ময়মনসিংহে ২৯টি বাস সড়কে চলাচল করছে।  


তিনি আরও বলেন, মালিকানাধীন বাসগুলো আন্ত:জেলায় চলাচল করে থাকে। আর বিআরটিসি জেলার লোকাল সার্ভিস। এতে সাধারন বাস মালিক বা শ্রমিকদের ক্ষতি হওয়ার কোন কারণ নেই। কিন্তু তারা অযৌক্তিকভাবে জনগনের বিপক্ষে গিয়ে জনপ্রিয় এই সরকারি সার্ভিসটি ধমিয়ে রাখতে চাইছে। এটা অন্যায় এবং অযৌক্তিক দাবি। এতে সরকারী স্বার্থ এবং সাধারন যাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। 


তিনি বলেন, সকাল ১১ টার দিকে প্রশাসন ও শ্রমিকদের আলোচনা হয়েছিল। আলোচনায় ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব সড়কে ৭ টি বিআরটিসি বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত বলবৎ আছে। তবে, আগে ৭ বাস দিনে ২২ বার নান্দাইল চৌরাস্তা পর্যন্ত আসা যাওয়া করতেন। এখন করবে ১৫ বার। এই সিদ্ধান্ত না মেনে তারা সড়ক অবরোধ করে। তবে, ওই সড়কে বিআরটিসি বাস চলাচল করবে।


এমকে সুপার ও শ্যামল ছায়া বাস পরিচালনা কমিটির সভাপতি তারা মিয়া বলেন, পাটগুদাম ব্রিজ মোড় থেকে এমকে সুপারের ৬০টি বাস ও শ্যামল ছায়া পরিবহনের ৪০টি বাস চলাচল করে। এরমধ্যে ডাবল ডেকারের বিআরটিসি বাস চলে সাতটি। বিআরটিসি বাসে ভাড়া কম হওয়ায় সব যাত্রী বিআরটিসি বাসে উঠে। এতে আমাদের এমকে সুপার ও শ্যামল ছায়া পরিবহনের বাস একবার আসা যাওয়া করলে তেলের টাকাও ওঠে না। গাড়ির আমদানি, শ্রমিক খরচ কোনোটাই ওঠে না। যে কারণে শ্রমিক ও বাস মালিকরা গত ২৭ জানুয়ারী সকাল থেকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কে এমকে সুপার ও শ্যামল ছায়া পরিবহনের বাস বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু, বিআরটিসি বাস চলে আসছিল।


তিনি আরও বলেন, গতকাল সকাল ১১ টায় বিআরটিসি কতৃপক্ষ ও প্রশাসনের সাথে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য বসা হয়েছিল। সেখাননে সিদ্ধান্ত হয়। ওই সড়কে পাঁচটি বিআরটিসি বাস চলাচল করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত না মেনে শ্রমিকরা বিআরটিসি বাস বন্ধের দাবিতে পাটগুদাম ব্রীজ মোড় এলাকায় তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। পরে শ্রমিক নেতা ও প্রশাসনের আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে আসে। তবে, বিআরটিসি বাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ওই সড়কে শ্যামল ছায়া, এমকে সুপার ও বিআরটিসি বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।


আরও পড়ুন: ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ক বাস চলাচল বন্ধ


জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন চানু বলেন, সকাল ১১ টার দিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও বিআরটি কতৃপক্ষের সাথে বসা হয়েছিল। কিন্তু, শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত না মেনে সড়ক অবরোধ করে। পরে শ্রমিক নেতা ও প্রশাসনের আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে আসেন।


এবিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ওই সড়কে বাস চলাচলের জন্য একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে, শুনেছি শ্রমিকরা সেই সিদ্ধান্ত না মেনে সড়ক অবরোধ করেছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য আবারও উভয়পক্ষকে নিয়ে বসা হবে। তবে, বিআরটিসি বাস বন্ধ থাকবে কিনা, তা বিআরটিসি কতৃপক্ষ বলতে পারবে।


আরএক্স/