এখনও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কিছু দেওয়ার বাকি আছে: কোহলি

ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি দীর্ঘ দুই মাস ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন। ওই সময়ে স্ত্রী আনুশকা শর্মার সাথে দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে দ্বিতীয় সন্তান অকায়ের জন্ম হওয়ার খবর জানান এই ক্রিকেটার। এর মাঝেই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে কোহলি বাদ পড়বেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন শুরু হয়। সাবেক ভারতীয় প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রীও তার বদলে তরুণদের বিশ্বকাপে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে। যা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন বিরাট কোহলি। 

নিজেদের ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছিল রোহিত শর্মার দল। ৪-১ ব্যবধানে তাদের জয়ের সেই সিরিজে কোহলি ছিলেন। সাময়িক বিরতি শেষে আইপিএল দিয়ে আবারও তিনি মাঠে ফিরেছেন। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তার ব্যাটে ভর করেই জয় পেয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ৪৯ বলে ৭৭ রান করে ম্যাচসেরাও হন কোহলি। পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা ও দুই মাস ক্রিকেটের বাইরে থাকা নিয়ে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি এ কথা বলেছেন।

কোহলি বলেন, ‘আমি জানি এখন আমার নাম বিশ্বের অন্য প্রান্তে কেবল ক্রিকেটের প্রচারের জন্যই ব্যবহার করা হয়। তবে মনে হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমার এখনও দেওয়ার কিছু বাকি আছে।’ কোহলির এই মন্তব্যের ইঙ্গিত ছিল কেভিন পিটারসেন এবং রবি শাস্ত্রীর করা মন্তব্যের দিকে। আইপিএলে ধারাভাষ্য দেওয়ার একপর্যায়ে কোহলির বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন এই সাবেক দুই ক্রিকেট তারকা।

আরও পড়ুন: অভিমান ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন আমির

পিটারসেন বলেন, ‘এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে আমেরিকায়। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিউইয়র্কে হবে। সেখানে ক্রিকেটের প্রচারের জন্য কোহলিকে অবশ্যই খেলানো উচিৎ।’ ইংল্যান্ডের সাবেক এই ব্যাটারের যুক্তিকে নাকচ করে দেন রবি শাস্ত্রী। ভারতের সাবেক এই প্রধান কোচ বলেন, ‘ক্রিকেটের প্রচার করার জন্য কাউকে একাদশে জায়গা দেওয়া উচিৎ নয়। জয়ের জন্য খেলতে হবে। ক্রিকেট নিজের গতিতে বেড়ে উঠবে। দলে কোনো ধরনের বোঝা নিয়ে যাওয়া উচিৎ নয়। ২০০৭ সালে ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তরুণদের নিয়েই জিতেছিল, এবারও দলে সেই তারুণ্য শক্তির প্রয়োজন।’

এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, রোহিত শর্মার আগ্রাসী মেজাজের ব্যাটিং তাকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেন করার জন্য এখনও যথোপযুক্ত করে রেখেছে। তবে বিরাট কোহলির অ্যাঙ্কর ভূমিকার আধুনিক টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটে প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, সেই বিষয়ে জাতীয় নির্বাচকরা এখনও নিশ্চিত নন। এই মুহূর্তে সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে কোহলি জাতীয় দলের চাহিদা অনুযায়ী মানানসই নন বলে মনে করছেন দলের নির্বাচকরা। তার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে খেলার ধরণ বদলাতে বলার থেকে আগ্রাসী স্বভাবের নতুন প্রজন্মের ওপরে আস্থা রাখা উত্তম বলে মনে হচ্ছে আগারকারদের।

আরও পড়ুন: মদ কোম্পানির লগো সম্বলিত জার্সি পরেননি মোস্তাফিজ

সেসব আলোচনা ও শাস্ত্রীর করা মন্তব্যের জবাবই যেন মৃদুস্বরে দিয়েছেন তারকা ব্যাটার কোহলি। এখনও তার টি-টোয়েন্টি খেলার দক্ষতা রয়েছে জানিয়ে এই ব্যাটার বলেন, ‘আমি দলের জন্য শুরুটা ভাল করার চেষ্টা করি। দ্রুত গতিতে রান তুলতে চাই, কিন্তু দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে সেটা সম্ভব হয় না। তখনই নিজের খেলার ধরন পরিবর্তন করতে হয়। এখন বোলাররাও বুঝে গিয়েছে আমি কভার ড্রাইভ ভাল মারতে পারি,আর তারা সেটাই আটকানোর চেষ্টা করে। আমাকেও তাই নতুন করে পরিকল্পনা করতে হয়। এখনও পর্যন্ত নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। না হলে বলের মোকাবিলা কী করে করব?’

দেশের বাইরে কীভাবে সময় কাটিয়েছেন, সেটিও বর্ণনা দিয়েছেন ভারতীয় এই তারকা, ‘আমরা কিছুদিন দেশে ছিলাম না। এমন এক জায়গায় ছিলাম, যেখানে কেউ আমাদের সেইভাবে চিনত না। স্রেফ পরিবারের সাথে একান্ত সময় দেওয়া, দুটি মাসের জন্য একদম স্বাভাবিক অনুভব করা আমার জন্য, পরিবার হিসেবে আমাদের জন্য এটা ছিল বাস্তব একটি অভিজ্ঞতা। দুই সন্তান নিয়ে পারিবারিক দিক থেকে অবশ্যই সবকিছু সম্পূর্ণ বদলে গেছে। কাজেই এই সময়টায় একসাথে থাকতে পারা, বড় সন্তানের সাথে সম্পর্কের যে সংযোগ তৈরি হয়েছে, তা এককথায় অসাধারণ।’

এমএল/