যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩২ অপরাহ্ন, ১৩ই মে ২০২৪
সোমালিয়ান দস্যুদের কবলে দীর্ঘ এক মাস আটক থাকার পর উদ্ধার করা হয় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিককে। এরপর জাহাজটি কয়লা নিয়ে দুবাই যায়। সেখান থেকে গত ৩০ এপ্রিল দেশের উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজটি।
সোমবার (১৩ মে) বিকালে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আবদুল্লাহ। বর্তমানে জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অবস্থান করছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) জাহাজের ২৩ নাবিক তীরে ওঠার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাল রাতেই কুতুবদিয়ায় ভিড়ছে এমভি আব্দুল্লাহ
যেভাবে বরণ করা হবে নাবিকদের
এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে নিয়ে আপাতত আনুষ্ঠানিক কোনও আয়োজন করা হচ্ছে না। জাহাজটি বিকালে কুতুবদিয়ায় ভিড়লেও নাবিকদের তীরে আনা হবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিকালে। এমনটাই জানিয়েছেন কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক তীরে উঠবে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায়। তাদের লাইটার জাহাজে করে সরাসরি সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে।’
কেএসআরএম সূত্র থেকে জানা যায়, নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএম-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তারা নাবিকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এসময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে সোমবার ২৩ জন নাবিকের অন্য একটি নতুন টিম পাঠানো হবে। জাহাজটিতে থাকা আগের নাবিকরা নতুনদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার পর মঙ্গলবার তীরে আসবেন।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে চট্টগ্রামের পথে রওনা হচ্ছে এমভি আব্দুল্লাহ
কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক সুস্থ আছেন। গত ৩০ এপ্রিল ভোররাত ৪টার দিকে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর নিয়ে দেশের পথে রওনা দেয়। জাহাজটি সোমবার কুতুবদিয়ায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।’
উল্লেখ্য, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে দীর্ঘ এক মাস পর গত ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সময় রাত ১২টা এবং বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় মুক্তি পায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক।
এর আগে, জলদস্যুদের মুক্তিপণের টাকা পৌঁছানো হয় একটি বিশেষ এয়ারক্রাফটের মাধ্যমে। এই এয়ারক্রাফট থেকে দস্যুদের নির্ধারিত স্থানে তিনটি ব্যাগভর্তি ডলার পৌঁছানো হয়।
মুক্তির পর জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। ২১ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে জাহাজটি। জাহাজটিতে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা সেখানে খালাস করা হয়। পরবর্তী সময়ে আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর লোড করা হয়। এসব পণ্য নিয়ে দেশের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।
আরও পড়ুন: ২৩ নাবিকসহ দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি। প্রায় এক মাস পর মুক্তিপণের বিনিময়ে জাহাজসহ ২৩ নাবিক মুক্তি পায়।
এসআর শিপিংয়ের অধীনে মোট ২৪টি জাহাজের মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত করা হয় এমভি আবদুল্লাহকে। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক ক্যারিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। মালিকানা পরিবর্তনের পর জাহাজের নামও পরিবর্তন করা হয়। নতুন নাম হয় এমভি আবদুল্লাহ।
জেবি/এজে