Logo

বিষধর হলেও তেড়ে এসে কামড়ায় না রাসেলস ভাইপার

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
২২ জুন, ২০২৪, ০১:১২
56Shares
বিষধর হলেও তেড়ে এসে কামড়ায় না রাসেলস ভাইপার
ছবি: সংগৃহীত

একটু সতর্ক থাকলে সাপও বাঁচবে, মানুষও বাঁচবে

বিজ্ঞাপন

রাসেলস ভাইপার সাপ। এ যেন এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। এটা বিলুপ্ত প্রায় একটা বিষধর সাপ, যা হঠাৎ করে বংশবিস্তার শুরু করেছে বলে নিত্যদিনের খবরে জানা যাচ্ছে। কিন্তু প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, আগে নিশ্চিত করে জানুন, আসলেই রাসেলস ভাইপার এভাবে ধেয়ে আসছে চারপাশে, নাকি কানে কানে শুনে শুনে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে আতঙ্কে মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন কৃষকেরা, আরেকদিকে যেখানে সাপ দেখা যাচ্ছে, তার জাত না জেনেই মেরে ফেলা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলছেন প্রাণিবিজ্ঞানীরা। তবে, ইতোমধ্যে কৃষকদের ভয় দূর করতে হাঁটু পর্যন্ত বুট পরার পরামর্শ দেওয়া থেকে শুরু করে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশবাদীরা বলছেন, সাপের অ্যান্টিভেনম যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে মৃত্যু কমানো যাবে। এই সাপ বিষধর কিন্তু কাউকে তেড়ে এসে কামড়ায় না। একটু সতর্ক থাকলে সাপও বাঁচবে, মানুষও বাঁচবে। না বুঝে সব সাপ মেরে ফেললে বাস্তুসংস্থানের ওপর চাপ পড়বে। আর সেটা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর কাঁকন হাটের এক কৃষককে জিজ্ঞেস করা হয়, রাসেলস ভাইপার সাপ দেখেছেন নাকি? জবাবে তিনি বলেন, আমি দেখিনি, কিন্তু আমার ভায়রা ভাই দেখেছে। সেই ভায়রা ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাপটা একটু অন্যরকম দেখতে। এই সাপকে আমরা ‘চন্দ্রবোড়া’ বলি। কিন্তু আমি শিওর না। এলাকার লোক মেরে ফেলার পরে আমি শুনেছি।

বিজ্ঞাপন

এই সাপ নিয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে করণীয় কী জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এটা অনেক বিষধর সাপ। এরা সাধারণত কৃষি জমিতে ইদুর, ব্যাঙ, কীট-পতঙ্গ অন্যান্য প্রাণী খেয়ে থাকে। না চিনে ভয়-ভীতি থেকে যেনতেন সাপ মেরে ফেললে খাদ্য-শিকলে প্রভাব পড়বে। সাধারণত সব সাপ ইঁদুর খায় না, এরা খায়। ইঁদুর বেড়ে গেলে সেটা জীবনযাত্রাকে কী পরিমাণে ব্যাহত করবে, তার ধারণাও আমাদের নেই। ফলে সংবাদমাধ্যমে আতঙ্ক না ছড়িয়ে, এই সময়ে সচেতনতামূলক কথাবার্তা যেন বলা হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সবার চেনানো দরকার সাপটা দেখতে কেমন। এটার সঙ্গে অজগর, স্যান্ডবোয়ারের অনেকটা মিল আছে। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই গায়ের গোল গোল রিং এর ভিন্নতা চোখে পড়বে। রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়ার গায়ে চাকা গোল গোল চিহ্নগুলো আলাদা আলাদা। অজগরের চাকা গোল গোলগুলো নেটের মতো, একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো। চিনে রাখুন, ভয়ের কিছু নেই্। এই সাপ দৌড়ে তাড়া করে না, আর বাসায় এসে কামড়াবে না।

বিজ্ঞাপন

এই সাপ কি হঠাৎই বেড়ে গেলো প্রশ্নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ নঈম গওহার ওয়ারা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ২০০০ সালের আগে তেমন একটা দেখা যেতো না। এটা বন্যার মাধ্যমে ভারত থেকে এসে থাকতে পারে। এই মুহূর্তে সাপের পরিমাণ নির্ধারণ ও অ্যান্টিভেনম নিশ্চিত করার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এমনিতে সাপ দেখলেই আমাদের এখানে পিটিয়ে মেরে ফেলার চলন আছে। সেটাতো বাস্তুসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। একসময় বেজি, গুইসাপ দেখলেই উল্লাসে মেরে ফেলেছি, সেই বেজি সাপ খেয়ে সহায়তা করতো। এসব আমাদের পাঠ্যসূচিতে আছে, কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে আমরা এটাকে কেউ মনে রাখি না।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প সংখ্যক রাসেলস ভাইপার সবসময়ই ছিল। কিন্তু বংশবিস্তারের মতো পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্য বেড়ে যাওয়া, পদ্মা অববাহিকার মাধ্যমে সেই বেল্ট ধরে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এরজন্য একই জমিতে বছরে তিন ফসল উৎপাদনও অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এমএল/ 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD