গাইবান্ধায় বন্যায় ৭৬ কোটি টাকার ফসলি জমির ক্ষতি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৫০ অপরাহ্ন, ৩০শে জুলাই ২০২৪


গাইবান্ধায় বন্যায় ৭৬ কোটি টাকার ফসলি জমির ক্ষতি
ছবি: প্রতিনিধি

সম্প্রতি গাইবান্ধায় বয়ে যাওয়া বন্যায় ৩ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ক্ষতিগ্রস্ত জেলা কৃষকরা। 


গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়। দুদফা বন্যায় গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলার ৪টি নদী তীরবর্তী হওয়ায় উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমান বেশি, এগুলো হচ্ছে  ভুট্টা, শাকসবজি, কলা, তিল, বাদাম, পাট ও রোপা আমন বীজতলাসহ ফসলি জমি নষ্ট হয়।    


আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ, শহর রণক্ষেত্রে পরিণীত


আর ৩ উপজেলা গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, ও সাদুল্লাপুর, এতে আংশিক ক্ষতি হয় কৃষকদের।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে অতি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলে বন্যায় প্লাবিত হয়।


ফলে জেলার সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। একই সঙ্গে নিমজ্জিত হয় কৃষি ফসল। ফলে পানির নিচে ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর ফসলি জমি  আক্রান্ত হলে তার মধ্যে ৩ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট  হয়। 


বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও চিন্তা কমেনি কৃষকদের। তারা যেসব ফসল ঘরে তুলে বিক্রি ও পরিবারের চাহিদা পুরণের স্বপ্ন দেখতেন, সেই স্বপ্ন চুরামার করেছে দুদফা  বন্যা। সেই সাথে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন, এ নিয়ে কৃষকদের  দুশ্চিন্তার শেষ নেই । 


আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা, পানিবন্দী হাজারও পরিবার


ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র নদ তীরের বাসিন্দা মেহেদী বাবু  বলেন, চলতি মৌসুমে ভুট্টা, বাদামসহ ৪ বিঘা জমিতে আরও বেশ কিছু ফসলাদি আবাদ করছিলেন। কিন্ত বানের পানির তাণ্ডপে নষ্ট হয়েছে সেইসব খেত। এখন এই ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নিবো এই নিয়ে চিন্তায় আছি । 


সুন্দরগঞ্জের আজগর আলী নামের আরেক কৃষক জানান, এবারের বন্যায় তার ৩ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন তিনি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান জানান সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যার কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি নিরূপণ করে অফিসে তাদের তালিকা জমা করেছেন। 


পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুকঘোড়াবান্ধা বালুখোলা গ্রামের নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক মরিচের আবাদ করেন লাভের আসা ছিল, অতিবৃষ্টির কারণে তা নষ্ট হয়ে যায়।  ঘোড়াবান্ধা গ্রামের জহুরুল ইসলাম সারা বছর শাকসবজি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবার অতিবৃষ্টির কারণে তা নষ্ট হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসি মানুষ


মনোহরপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরেফা আকতার বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে অনেকেরই শাকসবজি, বীজতলা,ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। তাদেরকে পরামর্শসহ কৃষকদের মাঝে শাকসবজি বীজ,ধান বীজ, পুষ্টি বাগান ধান বীজসহ সার, কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে। 


গাইবান্ধা জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, এবারের বন্যায় ৬৬ হাজার ৮৬৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষকদের ক্ষতির তথ্য সংশ্লিষ্টগণকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তাদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।


এসডি/