কুষ্টিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ধংস হওয়া থানায় ওসিকে নতুন করে বরণ করে নিলেন শিক্ষার্থীরা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০৬ অপরাহ্ন, ৯ই আগস্ট ২০২৪


কুষ্টিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ধংস হওয়া থানায় ওসিকে নতুন করে বরণ করে নিলেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: জনবাণী

মোঃ রবিউল ইসলাম হৃদয়, কুষ্টিয়া: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া মডেল থানা ও সার্কেল অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ধংস  হওয়া থানায় পুনরায় আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চোধুরীকে পিপিএম কে বরণ করে নিলেন শিক্ষার্থীরা। 


শুক্রবার (০৯ আগস্ট)  বেলা ১১ টার সময় থানার ওসিকে থানায় বরন করার সময় ফুলেল তোরা দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ওসি ও তার একজন পুলিশ সদস্যদের সাথে অগ্নিকাণ্ডে ধংস হওয়া থানা ও সার্কেল অফিস সহ ওসির বাসভবন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শন করেন।


আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় র‍্যাবের কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে যোগদান করলেন অফিসার ইলিয়াস খান


এর আগে গত (০৫ আগস্ট) আন্দোলনের সময় দুষ্কৃতিকারীরা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে থানা ও সার্কেল অফিস ভাঙচুর করে লুট করে পুড়িয়ে দেয়। যার ফলে থানা ও সার্কেল অফিস সহ ওসির বাসভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এরপর গত (০৭ আগস্ট) দিনব্যাপী সাধারন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ধংস স্তুপ থানা ও সার্কেল অফিস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন । তারপর শিক্ষার্থীরা পুলিশকে থানায় এসে পুনরায় আইনশৃংখলা ফিরিয়ে আনার আহবান জানালে পুলিশ আহবানে সাড়া দিয়ে পুনরায় থানায় দায়িত্বের জন্য আসেন। 


এসময় উপস্থিত ছিলেন,  বৈষম্য  বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ তোকির আহমেদ, সমন্বয় সুজন মাহমুদ,মোঃ সাব্বির হোসেন,মোঃ তুহিন হোসেন, রাইসুল আহমেদ, সাঈদ আহম্মেদ শ্রেষ্ঠ,রাফিউল ইসলাম রোজ,আব্দুল কাদের মুন্না,মোস্তাফিজুর রহমান,।


এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনে অংশগ্রহন করে নেতৃত্ব প্রদানকারী,  ফরিদ হোসেন,আবু সাঈদ,সাজেদুর রহমান বিপুল,আলমাজ হোসেন মামুন,চাঁদ পরামানিক,আক্তারুজ্জামান চন্টু সহ অনেক শিক্ষার্থীরা। 


আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কুষ্টিয়ায় পুলিশের অভিযানে সন্দেহভাজন ৩০ জন আটক


এবিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলার প্রধান সমন্বয়ক মোঃ তোকির আহমেদ বলেন, পুলিশ আমাদের পরম বন্ধু। গত তিন চারদিনে থানা সহ বাসা বাড়ি ভাংচুর ধংসযজ্ঞ এটা কিশোর গ্যাংয়ের কাজ হতেপারে৷ আবার ১৫ বছরের যে আক্রোশ পারিবারিক যে আক্রোশ সেটার থেকেও হতে পারে৷ এই ধংসযজ্ঞগুলো চালালে সাধারন মানুষরা কিন্তু ভিতুবস্থায় থাকবে। এজন্যই কিন্তু আমরা কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র সংস্কার করিনাই। গত ১৫ বছরে সাধারন মানুষ আওয়ামীলীগের কাছে যেই জিম্মিদষার মাঝে ছিলো এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা কিন্তু বাক স্বাধীনতা পেয়েছে। আর এর পর কোন অন্য দলও এই জিম্মিদষা করতে পারবেনা। গত ৫ তারিখে পুলিশের সাথে আমাদের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় তৃতীয় পক্ষ থানা, সার্কেল অফিস ও ওসির বাসভবন ভাংচুর করেছে এবং পুড়িয়ে দিয়েছে যার ফলে অস্ত্র,গোলাবারুদ,আসবাবপত্র সহ সরকারি নথিপত্র পুড়ে গেছে৷ এগুলো আমাদের টাকার ভ্যাট ট্যাক্স দিয়েই কেনা হয়৷ বর্তমানে অধিকাংশ জায়গায় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চলছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যদি পুলিশও মাঠে থাকতো তাহলে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা থাকতো। এসময় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ মাঠে থেকে অত্যান্ত জরুরী। তাই আমরা পুনরায় পুলিশদের থানায় থেকে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে বরণ করে নিয়েছি। 


কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও সার্কেল অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এর ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পুলিশ কর্মবিরতি ঘোষণা করে। বর্তমানে সমস্ত জায়গায় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কগন আমাদের পুনরায় থানা পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহবান জানান। আমরা তাদের ডাকে থানায় দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা খুব শীগ্রই আইনশৃংখলা ফিরিয়ে আনবো।



আরএক্স/