শুধু শেখ সেলিম না, নিপুণকে জয়ী করতে ফোন করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০২ অপরাহ্ন, ২০শে আগস্ট ২০২৪
ঘটনা ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি। সেদিন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রাথমিক ভোট গণনায় সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন ও জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক জয়ী হন। এদিকে, জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে পরাজিত হন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। কিন্তু ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে ভোট পুনর্গণনার জন্য আপিল করেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু সেখানেও একই ফলাফল পায় আপিল কমিটি।
পরে ঘটনা মামলায় গড়ায়। আদালত থেকে রায় এনে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেন অভিনেত্রী নিপুণ। তিনি পুরও সময় দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ আছে, নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী করতে নির্বাচন কমিশনারদের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখান রাজনৈতিক নেতারা। এমনকি নিপুণকে জয়ী করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা পিরজাদা হারুনকে মোবাইলে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম। শুধু তিনি (শেখ সেলিম) নয়, নিপুণকে জয়ী করতে সে সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামলও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করেছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে পিরজাদা হারুন বলেন, “২০২২ সালের নির্বাচনে যখন ভোট গণণা করা হচ্ছিল তখন শেখ সেলিম ১৭ থেকে ১৯ বার আমাকে ফোন করেছিলেন। আমার সঙ্গে তার কয়েকবার কথাও হয়েছে। ওই রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামলও আমাকে ফোন করেছিলন। তাদের দুজনের উদ্দেশ্যই ছিল এক।”
আরও পড়ুন: নতুন সিনেমা ‘হারুনের ভাতের হোটেল’
নাম প্রকাশ না করে কমিশনারদের একজন বলেন, “জীবনের হুমকি ছিল। যেকোনো সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, এমন শঙ্কা ছিল। আমাদের নির্বাচন কমিশনারদের একের পর এক ভয়ভীতি দেখিয়ে গালিগালাজ করা হয়। বলা হয় যে পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাবে। এমন লেভেল থেকে ফোন আসবে, ভাবতেই পারিনি। আমাদের একজনকে সেই সময় নিপুণকে জয়ী করাতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম সাহেব, তার মতো লোক। এটা আমাদের অবাক করেছিল।”
পিরজাদা হারুন বলেন, “ওই নির্বাচনে তার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, যা তাকে মানসিকভাবে এখনো আতঙ্কিত করে। নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী দেখাতে অনেক ওপর থেকে এক ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ একের পর এক ফোন করতে থাকেন। তিনি সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রায় সব মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রভাব খাটাতেন, নিয়ন্ত্রণ করতেন বলা যায়। কিন্তু আমি সরাসরি ‘না’ বলে দেই।”
আরও পড়ুন: ব্যারিস্টার সুমন প্রসঙ্গে পিয়া জান্নাতুল বললেন, ‘আমি তো ওনার বউ লাগি না’
পরবর্তী সময় মোবাইল ফোনে ভয়ও দেখানো হয়, এমনকি বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখানো হয় উল্লেখ করে হারুন বলেন, “তখন একের পর এক ফোনে আমাকে ভয় দেখানো হয় যে তুলে নিয়ে যাবে। পরে একটা জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বড় অঙ্কের টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা করা হলো। সেটা চলে গেল কোর্টে। তখন নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে বানিয়ে দেওয়া হলো অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। নানা কাণ্ডে আমাকে ছোট করা হলো, এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হলো।”
গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বদলে যান ঢালিউড অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার। রাজনৈতিক অঙ্গনে তার চলাফেরা বাড়তে থাকে। সেই সময়ই পরিচয় হয় শেখ সেলিমের সঙ্গে। ২০১২ সালে বনানীর অভিজাত এলাকায় নিপুণের গড়ে তোলা নিজস্ব পারলার উদ্বোধন করেন তিনি।
জেবি/এসবি