শ্রীপুরে নকল ব্যাটারির পানির কারখানায় ভয়াবহ প্রতারণা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গাজীপুরের শ্রীপুরে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নামিদামি ব্র্যান্ডের ব্যাটারির পানি নকল করে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে। হ্যামকো, ভলবো, নাভানাসহ জনপ্রিয় কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে নকল ব্যাটারির পানি বাজারজাত করছে তারা, যা ব্যবহার করে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। এ বিষয়ে সংবাদের তথ্য সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের ম্যানেজের চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষের লোকজন।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে অটোরিকশা-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার আবদার দক্ষিণপাড়া গ্রামে ‘রয়েল ব্যাটারি’ নামক একটি কারখানার আড়ালে চলছে এই জালিয়াতি। কারখানার মালিক নেওয়াজ শরীফ মিন্টু, যিনি অভিনব কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ওই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সেমিপাকা দুটি বিল্ডিং ও টিনশেড ঘেরা একটি স্থাপনার ভেতরে গোপনে চলছে নকল ব্যাটারির পানি উৎপাদনের কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশু শ্রমিকদের অত্যন্ত কম মজুরিতে কাজে লাগানো হয়েছে। তাদের দিয়ে পানির ট্যাংক থেকে বোতল ভর্তি করানো হয়, এরপর এসব বোতলে নকল মোড়ক লাগিয়ে বাজারজাত করা হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার বোতল নকল ব্যাটারির পানি শ্রীপুর, গাজীপুর সদর, ময়মনসিংহসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিবহনের মাধ্যমে ২ লিটার, ৫ লিটারের বোতল ও ক্যান্টিনের মাধ্যমে এই প্রতারণার জাল বিস্তৃত হচ্ছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, নকল পানি ব্যবহারের ফলে তাদের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নামিদামি কোম্পানির ব্র্যান্ডের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, যা পুরো বাজার ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সংবাদের তথ্য সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের ম্যানেজের চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষের লোকজন ঘুস দেয়ার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির মোরক ব্যবহার করে থাকলে নিঃসন্দেহে ভোক্তারা খারাপ পণ্য ব্যবহার করবে, এতে হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেইসাথে ওই কারখানায় সকল শ্রমিক যেহেতু শিশু, এটাও মারাত্মক অপরাধ। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারখানাটি সিলগালা করে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে কারখানার মিনি বয়লার বিস্ফোরণে ২০ শ্রমিক আহত
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যরিস্টার সজীব আহমেদ জানান, এ বিষয়টি অবগত হয়েছি। শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গ্রাহকদের প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই চক্র আরও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এসডি/