৭ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হারল টাইগাররা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০১ অপরাহ্ন, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫


৭ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হারল টাইগাররা
ছবি: সংগৃহীত

সবশেষ ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর বেশ কয়েকবার দেখা হলেও নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি রোডেশিয়ানরা। তবে এবার লড়াই করার মতো প্রস্তুতি নিয়েই বাংলাদেশে পা রেখেছে বলে জানিয়েছিলেন অধিনায়ক শন উইলিয়ামস। সিলেটে ব্যাটে-বলে পারফরম্যান্স করে তার কথাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে সতীর্থরাও।


সিলেটে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রান তুলে। ৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৫৫ রানে থামে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রোডেশিয়ানরা।


১৭৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উড়ন্ত শুরু পায় জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারান রীতিমতো ঝড় তোলেন! বিশেষ করে বেনেট শুরু থেকেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। প্রথম ইনিংসেও নতুন বলে কাউন্টার অ্যাটাককে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। এবারও হাঁটলেন একই পথে। আর তাতে এবারও সফল।


আরও পড়ুন: ‘শক্তিশালী’ জিম্বাবুয়ের সামনে কাঁপছে বাংলাদেশ!


বেনেটের থেকে কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও বাংলাদেশি বোলারদের খেলতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি আরেক ওপেনার কারানের। দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেও শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফিরেছেন ফিফটি না পাওয়ার আফসোসকে সঙ্গী করে!


ইনিংসের ২১তম ওভারে কারানকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের ফুল লেংথের বল লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েন কারান। ৭৫ বলে ৪৪ রান করেছেন এই ওপেনার। তার বিদায়ে ভেঙ্গে যায় ৯৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।


মিরাজের পর ব্রেকথ্রু দিয়েছেন আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ২৬তম ওভারের শেষ বলটি মিড স্টাম্পের অপর করেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। সেখানে টার্নের আশায় ব্যাট পেতেছিলেন নিক ওয়েলচ। তবে বল সোজা আঘাত হানে তার পায়ে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৯ বলে ১০ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।


২ উইকেটে ১১৭ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের চা বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে। বিরতির পর জ্বলে উঠেন মিরাজ। ৩১তম ওভারের প্রথম বলে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন উইলিয়ামস। মিরাজের বলে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৯ রান। 


আরও পড়ুন: ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে যা বললেন মেসি


নিজের পরের ওভারেও উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। এবার তার শিকার বেনেট। ইনিংসের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ব্যাট করা এই ওপেনার বড় শট খেলতে গিয়েই ধরা পড়েন। লং অনে মুশফিকের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৮১ বলে করেছেন ৫৪ রান।


চাপের মুখে সুবিধা করতে পারেননি অভিজ্ঞ ক্রেগ আরভিন। তাইজুলের করা লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন তিনি। অবশ্য শুরুতে আম্পায়ার আউট দেননি। পরে রিভিউ নেন শান্ত। তাতে দেখা যায় ব্যাট ছুঁয়ে বল জমা পড়েছে উইকেটরক্ষক জাকেরের গ্লাভসে।


সাতে নেমে দ্রুত ফিরেছেন নায়াশা মায়াভো। নিজের খেলা তৃতীয় বলেই সিলিতে ক্যাচ দিয়েছিলেন। তবে সেটা হাতে জমাতে পারেননি বদলি ফিল্ডার জাকির হাসান। অবশ্য তার সেই ভুলের জন্য খুব বেশি মাশুল দিতে হয়নি। পরের ওভারেই মিরাজ এসে বোল্ড করেন মায়াভোকে। ৪ বল খেলে ১ রান করেছেন তিনি।


ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকেও দ্রুত ফেরান মিরাজ। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসেও ফাইফার পেয়েছেন তিনি। দুই ইনিংসেই ফাইফারসহ ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন। একই সঙ্গে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন এই অফ স্পিনার।


আরও পড়ুন: ক্রিকেটার সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক


মাসাকাদজাকে সরাসরি বোল্ড করে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মিরাজ। তবে বাধা হয়ে দাড়ায় এনগারাভা-ওয়েসলি মাদেভারে জুটি। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৩ রানের জুটিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা।


এমএল/