অপ্রয়োজনে লাঠিচার্জ না করার নির্দেশ দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪২ অপরাহ্ন, ২৯শে এপ্রিল ২০২৫

জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। অপ্রয়োজনে লাঠিচার্জ বা বলপ্রয়োগ করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী পর্ব শেষে রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ অডিটরিয়ামে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে বিভিন্ন স্তরের পুলিশ সদস্যরা নিজেদের নানা সমস্যা-সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারও কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা নেওয়া যাবে না। ঘুষ, দুর্নীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাবস্থায় আছি, পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, কাজ করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যে বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রয়োজন তা হচ্ছে- পুলিশ সদস্যদের ধৈর্য ধারণ। ধৈর্য ধারণ করে আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
পুলিশ সদস্যদের ব্যবহার, সেবার মানসিকতা ও আন্তরিকতা দিয়ে মানুষের মন জয় করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে পুলিশের প্রতি জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। সাধারণ মানুষ যেন কোনো রকম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার না হয়- সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
পুলিশে সবচেয়ে প্রকট সমস্যা অধস্তন ফোর্সদের থাকা ও খাওয়ার সমস্যা। এটা উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের যানবাহন সমস্যা রয়েছে। তবে তা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। থানার জন্য ২০০টি পিকআপ ভ্যান কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে।
পুলিশের নানা কল্যাণমুখী কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, পুলিশের সুদূরপ্রসারী কল্যাণে বর্তমান সরকার কাজ করছে। কনস্টেবল থেকে এসআইদের ঝুঁকি ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে উচ্চ সীমা (সিলিং) বন্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে নিচের স্তরের পুলিশ কর্মকর্তারা আগের চেয়ে অধিক হারে ঝুঁকি ভাতা পাবেন। পুলিশ সদস্যদের মোটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে পুলিশের এসআই ও এএসআইদেরকে এ ঋণ দেওয়া হবে। সরকার যাতে ঋণের সুদের টাকা পরিশোধ করে-সে বিষয়েও অনুরোধ জানানো হবে।
আরও পড়ুন: মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার নিশ্চিতে তিন দাবি
তিনি আরও বলেন, অধস্তন পুলিশ সদস্যদেরকে নিজেদের বৃহত্তর জেলার মধ্যে পদায়নের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। একইভাবে স্বামী-স্ত্রী দুজনে পুলিশ সদস্য হলে তাদেরকে একই জেলায় পদায়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
পুলিশের জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে (টিওএন্ডই) জনবল বৃদ্ধি করা দরকার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তিনি আইজিপিকে নির্দেশ দেন।
মতবিনিময় সভায় ট্রাফিক সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসহ ট্রাফিক বক্স বা শেলটার স্থাপন, রাতে টহলরত পুলিশ সদস্যদের জন্য তাঁবু স্থাপন, মাদকের মূল হোতাদের ধরতে শক্ত অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ওই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী উপসিস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আইজিপি বাহারুল আলম।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বামা’র প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর পরিদর্শন

কোনো সেনা সদস্য 'গুমে' জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা: সেনাসদর
