Logo

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেও ৫০০ হাফেজের বিজয় উৎসব

profile picture
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৯:৩১
4Shares
গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেও ৫০০ হাফেজের বিজয় উৎসব
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনী টানা দুই বছরের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে বিপর্যস্ত গাজার বুকে আবারও ফিরেছে আনন্দের রেশ। পশ্চিম গাজা শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরে ৫০০ কোরআনের হাফেজ ও হাফেজাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে আনন্দ মিছিল ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজার ক্লান্ত মানুষের মনে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়েছে এই আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

ভয়াবহ ধ্বংস ও অবরোধের মধ্যেও গাজার মানুষ যে তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয় আঁকড়ে ধরে আছে, এই আয়োজনে তারই প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।

ফিলিস্তিনি ইনফরমেশন সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরুরি কমিটির তত্ত্বাবধানে এবং আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন ও কুয়েতভিত্তিক আলিয়া চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আয়োজিত এই কর্মসূচির প্রতিপাদ্য ছিল ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের হাত ধরে আবারও বিকশিত হচ্ছে’।

শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শুরু হয় আনন্দ মিছিল। মিছিলের তাকবির ও তাহলিল ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সারিবদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যান হাফেজ ও হাফেজারা। তাদের হাতে কোরআন শরিফ, ফিলিস্তিনের পতাকা এবং দৃঢ়তা ও আশার বার্তা লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল মনমুগ্ধকর ।

বিজ্ঞাপন

রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে স্থানীয়রা করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে তাদের অভিনন্দন জানায় সবাইকে । যে সড়কগুলো একসময় বোমা হামলা ও ধ্বংসস্তূপের সাক্ষী ছিল, সেগুলোই সেদিন পরিণত হয় প্রশান্তি ও উল্লাসে ভরা এক মানবিক প্রাঙ্গণে। অনেকের কাছে এই দৃশ্য ছিল এক গণউৎসবময়।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া হাফেজা ইবতিসাম আবু হুয়াইদি বলেন, দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করা সহজ ছিল না। তবে কঠিন সময়গুলোতে কোরআনই তাকে শক্তি ও অবিচলতা জুগিয়েছে। আবু হুয়াইদি আরও বলেন, আল্লাহর কিতাব আঁকড়ে ধরাই ছিল বেঁচে থাকার আশ্রয়। তার চার সন্তানও যেন কোরআনের হাফেজ হতে পারে সেই কামনা করে তিনি গাজার তরুণ-তরুণীদের কোরআনের সঙ্গে যুক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের এক কোণে হুইলচেয়ারে বসে আবেগাপ্লুত চোখে পুরো আয়োজন উপভোগ করেন এক হাফেজের অভিভাবক মুশিরা আবু ওয়াতফা। তিনি বলেন, দারিদ্র্য ও অবরোধ গাজার মানুষকে কখনোই কোরআন শিক্ষার পথ থেকে সরাতে পারেনি। শরনার্থী শিবিরের রাস্তাজুড়ে হাফেজদের উপস্থিতি মানুষের মনোবল বাড়িয়েছে। আবারও প্রমাণ করেছে, দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তির আলোকবর্তিকা হলো কোরআন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে হাফেজ ও হাফেজাদের হাতে সম্মাননাপত্র ও প্রতীকী উপহার তুলে দেওয়া হয়। আয়োজকেরা বলেন, গাজার কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ জোরদার করাই তাদের লক্ষ্য।

বিজ্ঞাপন

বলা যায় যে, দুই বছরব্যাপী ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ৮৩৫টির বেশি মসজিদ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৮০টির বেশি। (১০ অক্টোবর) কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল ৮৭৫ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এতে প্রাণ গেছে ৪১১ ফিলিস্তিনির এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ১১২ জন।

২০২৩ সালের (৮ অক্টোবর) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় চালানো এই আগ্রাসনে প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ। পাশাপাশি বেসামরিক অবকাঠামোর প্রায় ৯০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

জেবি/এমএল
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD