মনোনয়ন দাখিল থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত করণীয় স্পষ্ট করল ইসি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই, জামানত জমা, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও আপিল–সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে ‘পরিপত্র-২’ জারি করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। নির্ধারিত সময়ের পর আর কোনো মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না।
পরিপত্রে ইসি স্পষ্ট করেছে, নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের কোন প্রক্রিয়ায়, কীভাবে এবং কোন শর্তে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে—সে বিষয়ে সবাইকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে।
মনোনয়নপত্র দাখিলের পদ্ধতি ও সময়সূচি
বিজ্ঞাপন
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ১২ অনুচ্ছেদ এবং সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের আলোকে যোগ্য প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরাসরি মনোনয়নপত্র (ফরম-১) দাখিল করতে পারবেন। প্রার্থী ছাড়াও তার প্রস্তাবকারী বা সমর্থকও মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত যেকোনো দিনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। তবে শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার পর কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিজ্ঞাপন
মনোনয়নপত্র গ্রহণের সময় দাখিলকারীর নামে ক্রমিক নম্বর দেওয়া হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ করে নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক।
জামানত ও প্রস্তাবকারী-সমর্থকের শর্ত
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীকে জামানত হিসেবে ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এ অর্থ নগদ, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে জমা দেওয়া যাবে।
বিজ্ঞাপন
একজন প্রার্থীর পক্ষে একাধিক মনোনয়নপত্র জমা হলেও জামানত একবারই দিতে হবে। অন্যান্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে মূল চালানের সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করতে হবে।
জামানতের অর্থ নির্ধারিত কোডে বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোনো ব্যাংক কিংবা সরকারি ট্রেজারিতে জমা দিতে হবে।
প্রস্তাবকারী ও সমর্থককে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হতে হবে এবং তারা অন্য কোনো মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন—এমন হওয়া যাবে না।
বিজ্ঞাপন
দলীয় প্রার্থী ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিধান
রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতার স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
কোনো নিবন্ধিত দল যদি একটি আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়, তবে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত লিখিত পত্রের মাধ্যমে ২০ জানুয়ারি বিকাল ৫টার মধ্যে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম রিটার্নিং অফিসারকে জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্য মনোনীতদের প্রার্থিতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হবে।
বিজ্ঞাপন
বৈধভাবে মনোনীত কোনো প্রার্থী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজে বা লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারবেন। একবার লিখিত নোটিশ দেওয়া হলে বা দলীয়ভাবে চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা হলে তা আর পরিবর্তন করা যাবে না।
মনোনয়নপত্র বাছাই ও আপিলের নিয়ম
রিটার্নিং অফিসার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর বিধান অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন। বাছাইয়ের সময় প্রার্থী, তার নির্বাচনী এজেন্ট, প্রস্তাবকারী, সমর্থক কিংবা প্রার্থী কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
ছোটখাটো বা সারবত্তাহীন ত্রুটির কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে না। তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধনযোগ্য ত্রুটি হলে সঙ্গে সঙ্গেই তা ঠিক করার সুযোগ দিতে হবে। তবে হলফনামার কোনো তথ্য পরিবর্তন বা সংশোধন করা যাবে না।
ভোটার তালিকার সঙ্গে প্রার্থীর নাম বা তথ্য পুরোপুরি মিল না হলেও শুধু সে কারণে মনোনয়ন বাতিল হবে না। সেক্ষেত্রে শিক্ষাগত সনদ বা বৈধ পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলের সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা ৫ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি বিকাল ৫টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। এসব আপিল ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে নিষ্পত্তি করবে ইসি।
অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের ঋণ খেলাপি সংক্রান্ত তথ্য নির্ধারিত ছকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে পাঠাতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া আচরণবিধি অনুযায়ী রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী উভয়কেই নির্ধারিত অঙ্গীকারনামা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
ইসি আরও জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনেও রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে।








