Logo

কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২০:২০
17Shares
কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ
ছবি: সংগৃহীত

কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুকমীলা জামান এবং ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় আসামি করা হয়েছে- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, আরামিটের জুনিয়র অফিসার ও ভুয়া প্রতিষ্ঠান ‘মডেল ট্রেডিং’-এর তথাকথিত মালিক মোহাম্মদ মিছবাহুল আলম, হিসাব খোলার পরিচয়দানকারী মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ, ইউসিবির সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আখতার মতিন চৌধুরী, এম এ সবুর, হাজী আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান ও মো. শাহ আলম।

এ ছাড়া ব্যাংকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত এমডি আরিফ কাদরী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার শ্রাবন্তী মজুমদার, সাবেক অপারেশন ম্যানেজার মোসাদ্দেক মো. ইউসুফ, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার মুঝায়োনা সিদ্দিক, সাবেক ক্রেডিট অফিসার মোহাম্মদ গোলাম রাকিব ও সাবেক শাখা প্রধান আলমগীর কবিরকেও আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরামিট গ্রুপের আরও দুই কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ ও মো. ইউসুফ চৌধুরীকেও এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের এক কর্মচারী মিছবাহুল আলমকে মডেল ট্রেডিং নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক বানানো হয়। ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহের পর ইউসিবির কারওয়ান বাজার শাখায় হিসাব খোলা হয়। কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই ব্যাংক কর্মকর্তারা ৩০ কোটি টাকার ঋণের আবেদন গ্রহণ করেন, যার মধ্যে ২১ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়।

ঋণ অনুমোদনের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তারা ভুয়া পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করে মডেল ট্রেডিংকে অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হিসেবে উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনগুলোতে কাগুজে গুদামঘর, মজুতকৃত পণ্য ও কোটি টাকার সম্পদের তথ্য জালিয়াতি করে যুক্ত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

২০১৮ সালের জুলাই-আগস্টে অনুমোদিত ২১ কোটি টাকা মডেল ট্রেডিং-এর হিসাবে জমা হয় এবং পরে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়। এমনকি এক গ্রাহকের নামে নেওয়া ২৫ কোটি টাকার আরেকটি ঋণের অর্থ ঘুরিয়ে এনে এই ঋণ পরিশোধ দেখানো হয়, যা প্রতারণা ও মানিলন্ডারিংয়ের অংশ।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৬/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ মামলার আগে আরও পাঁচটি মামলায় ১০৩ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সাইফুজ্জামান, তার স্ত্রী ও ব্যাংকটির একাধিক এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। সেসব ক্ষেত্রেও একই কৌশল, কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে অর্থ লোপাট করা হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানে প্রকাশ পায়, বিদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিকানা আছে তার পরিবারের। দুদকের অনুসন্ধানে এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি বাড়ি ও অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজের আদেশ দিয়েছে আদালত।

এছাড়া গত ৫ মার্চ আদালতের এক আদেশে সাইফুজ্জামান ও তার পরিবারের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়, যাতে জমা রয়েছে ৫ কোটি টাকার বেশি। একই আদেশে তার ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দ করা হয়। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD