অক্টোবরেই বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা, যুক্ত হচ্ছেন মিত্ররাও

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপি প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় নেতাদের অগ্রাধিকার দিয়ে চলছে সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া।
বিজ্ঞাপন
পাশাপাশি আসন ভাগাভাগি নিয়ে মিত্র দলগুলোকেও প্রার্থীর তালিকা জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবরের মধ্যেই আসনভিত্তিক প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরই মধ্যে তিনি মাঠপর্যায়ে জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক ত্যাগ ও গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের যাচাই করেছেন। তালিকা তাঁর হাতে রয়েছে, শিগগিরই তা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
গত ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর টানা দুই দিন ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রাজশাহী, পাবনা, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধার একাধিক প্রার্থী সাক্ষাৎকার দেন। একই আসনে একাধিক প্রার্থীকে ডেকে তাঁদের বক্তব্যও শোনা হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: দলীয় লোগোতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে জামায়াত
সাক্ষাৎকারে বিএনপি নেতারা স্পষ্ট করে বলেন, চূড়ান্ত মনোনয়ন যাকে দেওয়া হবে, সবাইকে তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সাক্ষাৎকারের ধারাবাহিকতা আগামী দিনগুলোতেও চলবে।
জয়পুরহাট, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলার প্রার্থীরা সাক্ষাৎকারে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, শিল্পপতি ও স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রিয় নেতৃত্ব। সাক্ষাৎকারে সাংগঠনিক অবদান, আন্দোলনে ভূমিকা এবং স্থানীয় জনসম্পৃক্ততাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, “দীর্ঘ আন্দোলন করেছি, মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। প্রার্থী না হলেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবো।”
সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বিএনপি আগাম কিছু প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দিয়েছে। তবে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি নাকচ করে বলেছেন, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া সবসময় গঠনতান্ত্রিক নিয়মে হয়। গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
বিএনপির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, সংসদ নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টারি বোর্ড গঠিত হবে, যেখানে স্থায়ী কমিটিই চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও আলোচনায় যুক্ত থাকবেন, তবে তাঁরা প্রার্থী হলে সেই সভায় অংশ নিতে পারবেন না।
বিজ্ঞাপন
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১২-দলীয় জোটের শরিকরাও নিজেদের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করছে। এলডিপি ইতোমধ্যে তালিকা তৈরির কাজ শেষ করেছে। বিএনপিকে তালিকা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) জানিয়েছে, ঢাকাসহ রাজশাহী, সাতক্ষীরা, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ ও চট্টগ্রামের একাধিক আসনের তালিকা তারা দ্রুত জমা দেবে।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সময় হলে সবার সামনে প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই।”
অন্যদিকে বেগম সেলিমা রহমান বলেন, “বিএনপি সবসময় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত থাকে। যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে। আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকা মিত্রদেরও প্রার্থী তালিকায় বিবেচনা করা হচ্ছে।”